পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৬
ময়ূখ

দেখিয়া যুবতী তাহাকে বলপূর্ব্বক চাপিয়া ধরিল এবং কহিল, “উঠিওনা, উঠিওনা, এখনই ক্ষতমুখে রক্তস্রাব আরম্ভ হইবে।” যুবক মুখ বিকৃত করিয়া কহিল, “বড় বেদনা, উঠিতে পারিলাম না, আমার কি হইয়াছিল ললিতা?” “ললিতা কে?” “তুমি কি ললিতা নহ?” “আমি যে গুলরুখ্‌; জীবনসর্ব্বস্ব, তুমি আমায় চিনিতে পারিতেছ না কেন?” “চিনিতে পারিব না কেন, তুমি নিশ্চয় ললিতা।” “তবে আমি ললিতা।” “এতক্ষণ দুষ্টামি করিতেছিলে কেন? ললিতা, আমার সর্ব্বাঙ্গে বেদনা কেন?” “তুমি যে যুদ্ধে আহত হইয়াছ” “যুদ্ধ? কোথায় যুদ্ধ?” “কেন সপ্তগ্রামের যুদ্ধ?” “সপ্তগ্রাম? আমি কি ভীমেশ্বরে নাই? তবে কি স্বপ্ন সত্য?”

 এই সময়ে কক্ষের দ্বারের পরদা অপসারিত হইল, পূর্ব্ব রাত্রির বৃদ্ধ দ্বারে দাঁড়াইয়া কহিলেন, “মা, হকিম আসিয়াছেন।”

 যুবতী শয্যাপার্শ্ব ত্যাগ করিয়া কহিল, “হকিমকে লইয়া আসুন, আমি কক্ষেই থাকিব।” বৃদ্ধ হকিমকে লইয়া কক্ষে প্রবেশ করিলেন, হকিম রোগীকে পরীক্ষা করিয়া কহিলেন, “আঘাত গুরুতর, তবে যুবা বয়স, সম্ভবতঃ আরোগ্য হইবেন। ইনি কোথায় আহত হইলেন?” বৃদ্ধ কহিলেন, “কল্য রাত্রির যুদ্ধে।” “ইনি কি বাদশাহী ফৌজের সেনা?” “হাঁ।” “শুনিয়াছি গোকুলবিহারীর একজন নায়ক বড় ভারি লড়াই করিয়াছে। আসদ্‌ খাঁ বলিতেছিলেন যে তাহার জন্যই সপ্তগ্রাম রক্ষা হই-