পাতা:মরণের ডঙ্কাবাজে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মরণের ডঙ্কা বাজে

 পথে বল্লে— তােমার কি হোল হে সুরেশ্বর? ও রকম মুখ গম্ভীর করে মনমরা হয়ে পড়লে কেন?

 সুরেশ্বর বল্লে— কই না, ও কিছু নয়, চলো।

 জাহাজে ফিরে এসেও কিন্তু সুরেশ্বরের সে ভাব দূর হোল না। ভাল করে কথা কয় না, কি যেন ভাবছে। নৈশ ভােজের টেবিলে ও ভাল করে খেতেও পারলে না।

 রাত ৯টার পরে পিনাং থেকে জাহাজ ছাড়লে সুরেশ্বর যেন কিছু স্বস্তি অনুভব করলে। পিনাং বন্দরের জেটির আলােকমালা দূরে মিলিয়ে যাচ্ছে, ওরা ডেকে এসে বসেচে নৈশ ভােজের পরে।

 হঠাৎ সুরেশ্বর বলে উঠলাে— উঃ, কি ভয় পেয়ে গিয়েছিলুম ওই চীনা দেবতার মূর্ত্তিটা দেখে।

 বিমল হেসে বল্লে— আমি তা বুঝতে পেরেছিলুম কিন্তু, সত্যি, তুমি এত ভীতু তা তাে জানি নে! স্বীকার করি মূর্ত্তিটা অবশ্যি খুব কমনীয় নয়, তবুও—

 সুরেশ্বর গম্ভীর মুখে বল্লে— আমার মনে হচ্ছে কি জানো বিমল?

 আমরা যেন এই দেবতার কোপদৃষ্টিতে পড়ে গিয়েচি। সব সময় সব জায়গায় যেতে নেই। আমরা সন্ধ্যাবেলা ঐ চীনে মন্দিরে গিয়ে ভাল কাজ করিনি।

 পিনাং থেকে ছাড়বার তিন দিন পরে জাহাজ সিঙ্গাপুর পৌঁছুলাে। দূর থেকে সিঙ্গাপুরের দৃশ্য দেখে বিমল ও সুরেশ্বর খুব খুশি হয়ে