পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পণ্ডিতগণের সহিত বিচার SRS একভাগ প্ৰতিমা, একশত বৎসরের পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, অবশিষ্ট সমুদয় উনিশভাগ, একশত বৎসরের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। বস্তুত:, যে যে দেশে ধনের বৃদ্ধি আর জ্ঞানেব ক্ৰটি হয়, সেই সেই দেশে, প্ৰায় পরমাৰ্থ সাধন বিধিমতে না হইয়া লৌকিক খেলার ন্যায় হইয়া উঠে।” রাজা রামমোহন রায় বলেন যে, হিন্দুশাস্ত্রে পরমাত্মার কোনরূপ মূৰ্ত্তি বা বিগ্ৰহ স্বীকাব করা হয় না। বেদ, স্মৃতি, পুরাণ, আগম কোথাও এরূপ বলা হয় নাই যে, পরমাত্মার নিত্য বিগ্ৰহ আছে। রাজা রামমোহন রায় আরও বলেন যে, হিন্দুশাস্ত্রে যেমন পরমাত্মার মূৰ্ত্তি স্বীকার করা হয় নাই, সেইরূপ পরমাত্মার অবতারের কথাও শাস্ত্ৰে কোথাও নাই। হিন্দুশাস্ত্ৰে (পুরাণে) যে সকল অবতারেব কথা আছে, তাহা বিষ্ণুশিবাদি দেবতার অবতাব ; আর যে সকল প্ৰতিমার কথা আছে, তাহাও বিষ্ণু, শিব, গণেশ, দুৰ্গাদি দেবতার প্রতিমা । পরমাত্মার বিগ্রহ এবং অবতারের মত গৌরাঙ্গীয় বৈষ্ণবগ্রন্থেই পাওয়া যায়। রাজার মতে পরমাত্মার মূৰ্ত্তি ও পরমাত্মার অবতাবের কথা, হিন্দুশাস্ত্ৰে একেবারেই নাই। হিন্দুশাস্ত্ৰে কেবল কল্পনা বা ৰূপক বলিয়া দেববিগ্রহে বা দেবাবতারে ঈশ্বরপূজার বিধি আছে। vg অপরদিকে, বিগ্ৰহমাত্রেরই উপাদান ঈশ্বরের মায়াশক্তি, এবং জীবাত্মা মাত্রেরই চৈতন্য বা আত্মাংশে, ব্ৰহ্মের সহিত একত্ব আছে । আর, পাধির তারতম্যানুসারে, জীবে ব্ৰহ্মচৈতন্যের বিকাশেব তারতম্য হইয়া থাকে। কিন্তু শাস্ত্রকারের স্বীকার করেন না যে, ঈশ্বরের বিগ্ৰহ আছে ; অথবা বিশেষ কোন বিগ্রহে স্বয়ং ভগবান অবতীর্ণ হইয়া থাকেন। ভট্টাচাৰ্য্য ব্যঙ্গ করিয়া লিখিয়াছিলেন যে, “সে কেমন অদ্বৈতবাদীযে বলে যে, রূপগুণবিশিষ্ট দেবমনুষ্যাদি ও আকাশ, মন, অন্নাদি ব্ৰহ্ম হইতে ভিন্ন, এবং সে সকল ব্রহ্মোদেশে উপাস্য নহে ।”