পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপক্ৰমণিকা G একখানি পত্রে, নিতান্ত সংক্ষেপে আত্মচারিত লিখিয়া পাঠাইয়াছিলেন। আমরা নিম্নে সেই পত্ৰখানি অনুবাদ করিয়া দিলাম । রামমোহন রায়ের স্বলিখিত সংক্ষিপ্ত জীবনী “প্ৰিয়বন্ধু, “আমার জীবনের সংক্ষিপ্ত বৃত্তান্ত আপনাকে লিখিয়া দিবার জন্য আপনি আমাকে সর্বদাই অনুরোধ করিয়াছেন । তদনুসারে আমি আহিলাদের সহিত আমার জীবনের একটি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত বৃত্তান্ত আপনাকে লিখিয়া দিতেছি । “আমার পূর্ব পুরুষেরা উচ্চশ্রেণীর ব্ৰাহ্মণ ছিলেন। স্মরণাতীত কাল হইতে র্তাহারা তাহাদিগের কৌলিকধৰ্ম্ম সম্বন্ধীয় কৰ্ত্তব্যসাধনে নিযুক্ত ছিলেন। পরে প্রায় একশত চল্লিশ বৎসর গত হইল, আমার অতিবৃদ্ধপ্ৰপিতামহ ধৰ্ম্মসম্বন্ধীয় কাৰ্য্য পরিত্যাগ করিয়া বৈষয়িক কাৰ্য্য ও উন্নতির অনুসরণ করেন । তাহার বংশধরেরা সেই অবধি তাহারই দৃষ্টান্ত অনুসারে চলিয়া আসিয়াছেন । রাজসভাসদদিগের ভাগ্যে সচরাচর যেরূপ হইয়া থাকে, তাহাদিগেরও সেইরূপ অবস্থার বৈপরীত্য হইয়া আসিয়াছে ; কখন সম্মানিত হইয়া উন্নতি লাভ, কখনও বা পতন ; কখন ধনী, কখন নিধন ; কখন সফলতা লাভে উৎফুল্ল, কখন বা হতাশ্বাসে কাতর। কিন্তু আমার মাতামহ-বংশীয়ের কৌলিক ধৰ্ম্মানুসারে ধৰ্ম্মযাজক-ব্যবসায়ী ; এবং উক্ত ব্যবসায়িগণের মধ্যে র্তাহাদিগের পরিবারের অপেক্ষা উচ্চতর পদবীস্থ অপর কেহই ছিলেন না । তাহারা বৰ্ত্তমান সময় পৰ্য্যন্ত সমভাবে ধৰ্ম্মানুষ্ঠান ও ধৰ্ম্মাচিস্তাতে অনুরত ছিলেন। সাংসারিক আড়ম্বরের প্রলোভন ও উচ্চাকাজক্ষার আগ্ৰহ অপেক্ষা, তাহারা মানসিক শান্তি শ্রেয়স্কর জ্ঞান করিয়া আসিয়াছেন।