পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা রামমোহন রায়ের বিষয়ে আরও কয়েকটি কথা ৬২৩ উপাসনা এবং অবতারবাদ দেখিতে পাওয়া যায় । কোন কোন ধৰ্ম্মাবলম্বিগণ কাল, স্বভাব ও বুদ্ধাদি মানিয়া থাকেন ; কিন্তু বেদ, বাইবেল ও কোরণ এই তিনটি ধৰ্ম্মশাস্ত্রের মূলে একেশ্বরবাদ । সময়ে এই তিন শাস্ত্ৰাবলম্বীদিগের মত বিকৃত হইয়া উপধৰ্ম্মে পরিণত হইয়াছে । কুসংস্কার ও উপধৰ্ম্মের মূল কারণ কি ? বহু দেবোপাসনা ও কুসংস্কার, হিন্দু ও খ্ৰীষ্টিয়ানদিগের মধ্যে দেখিতে পাওয়া য়ায়। দুৰ্ব্বালচিত্ত ও অশিক্ষিত সাধারণ লোকে, সুচতুর ধৰ্ম্মযাজকদিগের উপদেশপ্ৰভাবে ঐ সকল উপধৰ্ম্মে সহজেই বিশ্বাস করিয়াছে। রাজার মতে ইহার মূল কারণ জনসাধারণের মধ্যে শিক্ষার অভাব । সর্বসাধারণ লোকে বিজ্ঞান ও সাহিত্য শিক্ষা না করিলে, এই সকল কুসংস্কার দূর হইবার উপায় নাই । রাজা রামমোহন রায় কি ভাবে শাস্ত্ৰ মানিতেন ? অষ্টাদশ শতাব্দীর স্বাধীন চিন্তাশীল পণ্ডিতগণ শাস্ত্ৰ উড়াইয়া দিয়াছিলেন । তাহারা প্ৰকৃতি বা জগৎকে শাস্ত্ৰ বলিয়া স্বীকার করিতেন । মনুষ্যসমাজের ইতিবৃত্তে যাহা কিছু ঘটিয়াছে, তাহা মনুষ্যকৃত, কৃত্রিম’- সুচতুর রাজপুরুষ ও ধৰ্ম্মযাজকদিগের কায্য বলিয়া মনে করিতেন । এহ সকল মত বিষয়ে রাজার মৌলিকত্ব দেখা যায় । তিনি যেমন জগতে সত্যের,-ঈশ্বরের আবির্ভাব মানিতেন, সেইরূপ মানবের ইতিবৃত্তে সত্যের,-ঈশ্বরের প্রকাশ স্বীকার করিতেন । রাজার মতে, যুক্তি ও তর্ক, ধৰ্ম্মনির্ণয়ের একমাত্র উপায় নহে। তিনি যুক্তি মানিতেন, কিন্তু তাহার মতে শাস্ত্ৰই সমাজশৃঙ্খলার সাধারণভূমি, অৰ্থাৎ তাহার এই মত ছিল যে, সমাজশৃঙ্খলার সাধারণভূমিস্বরূপ শাস্ত্রের সহিত ব্যক্তিগত