পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদান্ত ও বেদান্তসূত্রের ভাষ্যপ্ৰকাশ 86 মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়, উক্ত বেদান্তসূত্রগ্রন্থের ঐ রূপ গৌরব ও মাহাত্ম্য প্ৰতীতি করিয়া প্ৰথমে ঐ গ্ৰন্থখানি বাঙ্গালা অনুবাদ সমেত প্ৰকাশ করেন। উহাতে ব্যাসমতে সমগ্ৰ বেদ ও সকল শাস্ত্রের মৰ্ম্ম ও মীমাংসা থাকাতে এবং সর্বলোকমান্য শঙ্করাচাৰ্য্য-কৃত ভাষ্যে সেই সকল মৰ্ম্ম সুস্পষ্টরূপে বিবৃত থাকাতে, রামমোহন রায়ের ব্রহ্মবিচার পক্ষে উহা ব্ৰহ্মাস্ত্ৰীস্বরূপ হইয়াছিল। তাহার পূর্বাপর এই লক্ষ্য ছিল যে, তিনি সকল জাতির সম্মানিত শাস্ত্ৰদ্বারাই প্ৰতিপন্ন করিবেন যে, একমাত্র নিরাকার ব্রহ্মোপাসনা সর্বশ্রেষ্ঠ । এই জন্য তিনি ৫৫৮ সূত্রসমন্বিত সমগ্ৰ বেদান্তসূত্রের উক্ত ভাষ্যসম্মত অর্থ ব্যাখ্যা করিয়া তাহা প্রচার করিলেন, এবং তৎসম্পর্কে আপনার যাহা বক্তব্য, তাহা ঐ গ্রন্থের ভূমিকা, অনুষ্ঠান ইত্যাদি নামে প্ৰকাশ করিলেন। বেদব্যাস-কৃত বেদান্তব্যাখ্যান কেহ অগ্ৰাহা করিতে পারেন না ; সুতরাং এই সম্পর্কে তৎকালীন পণ্ডিতমণ্ডলীর সহিত রামমোহন রায়ের বিচার চলিল । পরে তিনি যত বিচার করিয়াছিলেন, তাহাতে এই বেদান্তসূত্রের প্ৰমাণ সকল তাহার প্রধান অবলম্বনীয় ছিল। ১৭৩৭ শকে, রামমোহন “রায়ের সকল বিচারের ভিত্তিস্বরূপ এই প্ৰথম গ্ৰন্থ প্ৰথম প্ৰকাশ্ন হয়।” ইহার প্রথম মুদ্রাঙ্কণের অক্ষর সকল অতি প্ৰাচীন, এমন কি, ছাপার অক্ষর বলিয়াই বোধ হয় না । “এই গ্রন্থের তিন ভাগ। ভূমিকা, অনুষ্ঠান ও গ্রন্থ। ব্রহ্মোপাসনার বিরুদ্ধে এদেশীয়দিগের যে সকল সাধারণ আপত্তি আছে, গ্ৰন্থকার। ইহার ভূমিকাতে তাহার উল্লেখপূর্বক সিদ্ধান্ত করিয়াছেন যে, (১) সন্দ্রপ পরব্রহ্মই বেদের প্রতিপাদ্য। (২) রূপ ও গুণবিহীন নিরাকার ঈশ্বরের উপাসনা করিতে পারা যায় না, এমন নয়। (৩) পরমার্থসাধনের পূৰ্ব্বাপর এক বিধি নাই, অতএব বিচারপূর্বক উত্তম পথ আশ্রয় করাই