পাতা:মহাভারতীয় বৃহৎ ভীষ্মপর্ব্ব - কাশীরাম দাস.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভীষ্মপর্ব্ব।
৩৫

আনাইল সূর্য্যের নন্দন॥ বসিয়া বিরল স্থানে, যুক্তি করে তিন জনে, রাধেয় শকুনি দুর্য্যোধন। কহে রাজা কুরুবর, শুন কর্ণ ধনুর্দ্ধর, মম দুঃখ করি নিবেদন॥ পাণ্ডবে জিনিবে রণে, হেন আশা করি মনে, যুদ্ধ হেতু করিব উপায়। তিন লোকে সবে জানি, দেবতা অসুর মুনি, বাখানেয় ভীষ্ম মহাশয়॥ সেনাপতি করি তারে, ভাসি সুখ সরোবরে, সমরে জিনিব বৈরিগণে। মনে হেন করি সাদ, বিধি তাহে দেয় বাদ, হীন বল হৈল দিনে২॥ দ্রোণ ভীষ্ম মহাসত্ব, কৃপ শল্য সোম দত্ত, আর যত মহারাজগণ। পাণ্ডবেরে স্নেহে করি, ক্ষত্রধর্ম্ম পরিহরি, সবে মেলি উপেক্ষিল রণ॥ পড়ে রণে সেনাগণ, ব্যাকুল আমার মন, আর কেহ না করে উদ্দেশ। দেখিয়া এসব রীত, ভয় হৈল উপস্থিত, কি করিব কহ সবিশেষ॥ তুমি উদাসীন রণে, মম দুঃখ বিমোচনে, আর কেবা সংগ্রাম করিবে। নিবেদিনু বরাবরে, ভাল যুক্তি দেহ মোরে, কি উপায়ে পাণ্ডব মারিবে॥ বলে কর্ণ ধনুর্দ্ধর, শুন কুরু নরবর, সুযুক্তি বিচারে এই হয়। বুঝিয়া করহ কার্য্য, তবে সে পাইবা রাজ্য, করিবা পাণ্ডব পরাজয়॥ গঙ্গাপুত্ত্র কৃপ দ্রোণ, আর যত যোদ্ধাগণ, নাহি ছাড়ে পাণ্ডবের আশ। একেত পাণ্ডব ভক্ত, ভীষ্ম তাহে নহে শক্ত, সেনাপতি কর্ম্মেতে উদাস॥ রণ দেখুক ভীষ্ম বৃদ্ধ, করি আমি কার্য্যসিদ্ধ, পাণ্ডবেরে করিয়া সংহার। পুনরপি চলি যাহ, ভীষ্মের অগ্রেতে কহ, এই সে মন্ত্রণা কর সার॥ কর্ণের মন্ত্রণা শুনি, হিত হেন মনে গণি, রাজা গেল ভীষ্মের শিবির। নিবেদিল কুরুরাজ, সাধিতে আপন কায, শুন ভীষ্ম পিতামহ বীর॥ স্বীকার করিলা পূর্ব্বে, শত্রুগণ সংহারিবে, এবে উপেক্ষিয়া কর রণ। আমার ভাগ্যের বশে, চতুর্দ্দিগে শত্রু হাসে, আজ্ঞা কর করি কি এখন॥ সেনাপতি কর্ণে কর, মারুক পাণ্ডব বর, উপেক্ষা নাহিক তার স্থানে। করে বড় অহঙ্কার, সবান্ধব পরিবার, পাণ্ডবে নাশিবে ঘোর রণে॥ দুর্য্যোধন বাক্যজ্বালে, ভীষ্ম অগ্নি হেন জ্বলে, চক্ষ পাকলিয়া উঠে