পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তীকপর্ব্ব।
২০৩

নাই। ঐ ব্যক্তি সেই বৃক্ষের সহিতই ভস্মীভূত হয়, ও সেই বৃক্ষের সহিতই পুনর্জীবিত হয়। সেই আসিয়া আমাদিগকে এই অদ্ভুত বিষয়ের সংবাদ দেয়। মহারাজ! যথাদৃষ্ট যপাত সমুদায় নিবেদন করিলাম, এক্ষণে সাহা বিহিত হয়, করুন।

 এইরূপ মন্ত্রিবাক্য শ্রবণে কাজ। জনমেজয়, রোষরসে কলুষিত হইয়া, করে করে পরিপেষণ এবং মুহুর্মুহুঃ দীর্ঘ নিশ্বাস ও অশ্রুধাৱা পরিত্যাগ করিতে লাগিলেন। পরে অশ্রু নিবারণ ও যথাবিধি উদক স্পর্শ করিয়া তামর্ষভারে কিয়ৎ ক্ষণ মৌনভাবে চিন্তা করিলেন, অনন্তর মনে মনে, কর্ত্তব্য নির্ধারণ করিয়া মন্ত্রিগণকে কহিলেন, আমি তোমাদিগের নিকট পিতার পরলোক প্রাপ্তি বৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া যে কর্ত্তব্য স্থির করিয়াছি, তাহা শ্রবণ কর। আমার মত এই, যে দুরাত্মা তক্ষক শৃঙ্গীকে হেতুমাত্র করিয়া পিতার প্রাণহিংসা করিয়াছে, তাহাকে সমুচিত প্রতিফল দেওয়া কর্তব্য। যদি কাশ্যপ অসিতেন, পিতা অবশ্যই জীবন পাইতেন; কিন্তু তক্ষকের এমনই দুরাত্মতা যে, তাহাকে অর্থ দিয়া নিবৃত্ত করিল। যদিই পিতা কাশ্যপের প্রসাদে ও মন্ত্রিগণের মন্ত্রণাবলে জীবন পাইতেন, তাহাতে তাহার কি হানি হইত? কিন্তু কাশ্যপ আসিয়া পাছে রাজাকে জীবন দেন, এই আশঙ্কায় সেই দুরাত্মা অর্থদান দ্বারা বশীভূত করিয়া তাহাকে নিবৃত্ত করিয়াছে। এ অত্যন্ত অসহ্য অত্যাচার। অতএব আমি, আমার নিজের, উতঙ্কের ও তোমাদের সকলের মনোরথ সম্পাদনের নিমিত্ত পিতার বৈরনির্যাতন করিব।