পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৬
মহাভারত।

 এই রূপে দেবরাজ পলায়ন করিলে পর, তক্ষক ভয়ে অচেতন ও অনায়ত্ত হইয়া মন্ত্রপ্রভাবে যজ্ঞীয় অগ্নিশিখা সন্নিধানে উপস্থিত হইল। তখন ঋত্বিক্‌গণ কহিলেন, মহারাজ! আপনার কর্ম্ম বিধি পূর্ব্বক সম্পন্ন হইল, এখন আপনি ব্রাহ্মণকে বরদান করিতে পারেন। অনন্তর জনমেজয় আস্তীককে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, হে অপ্রমেয়প্রভাব ব্রহ্মবীর্য্যসম্পন্ন ব্রাহ্মণকুমার! আমি তোমাকে অভিলষিত প্রদান করিব, তুমি অভিপ্রেত বর প্রার্থনা কর, যদি তাহা অদেয় হয়, তথাপি দান করিব। এই সময়ে ঋত্বিক্‌গণ কহিলেন, মহারাজ! ঐ দেখ! তক্ষক তোমার বশে আসিতেছে, তাহার ভয়ঙ্কর গর্জন শুনা যাইতেছে। নিশ্চিত বোধ হইতেছে, ইন্দ্র তাহাকে পরিত্যাগ করিয়াছেন। তাহাতেই মন্ত্রবলে বিকলাঙ্গ বিচেতন ও ঘূর্ণমান হইয়া দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যাগ করিতে করিতে আসিতেছে।

 নাগরাজ তক্ষক হুতাশনে পতিত হয়, এমন সময়ে অবসর বুঝিয়া আস্তীক কহিলেন, রাজন্ জনমেজয়! যদি আমাকে বর দেওয়া অভিমত হয়, তাহা হইলে আমি এই প্রার্থনা করি, তোমার এই যজ্ঞ রহিত হউক, এবং সর্পগণ যেন আর এই যজ্ঞীয় হুতাশনে পতিত না হয়। রাজা এই রূপে প্রার্থিত হইয়া অনতিহৃষ্ট মনে আস্তীককে কহিলেন, হে ব্রহ্মন্! স্বর্ণ, রজত, গো, অথবা আর যাহা কিছু প্রার্থনা কর, তাহা তোমাকে দিতেছি, আমার যজ্ঞ রহিত করিও না। আস্তীক কহিলেন, রাজন্! আমি তোমার নিকট স্বর্ণ, রজত, অথবা গোধন প্রার্থনা করি না, আমার এই মাত্র প্রার্থনা, তোমার যজ্ঞ রহিত হউক, তাহা হইলে আমার মাতৃকুলের মঙ্গল হয়। জনমেজয় এইরূপ অভিহিত হইয়া পুনঃ পুনঃ কহিতে লাগিলেন, হে দ্বিজকুল-