পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পৌষ্যপর্ব্ব
৮১

করিয়াছিলেন এবং তাহাতেই কুণ্ডল লইয়া পুনরাগত হইয়াছ। অতএব, প্রিয় বৎস! আমি তোমাকে অনুজ্ঞা করিতেছি, গৃহে গমন কর। তুমি সকল মঙ্গল প্রাপ্ত হইবে।

 উতঙ্ক উপাধ্যায়ের অনুজ্ঞা লাভ করিয়া তক্ষকের বৈৱনির্যাতন সঙ্কল্প করিয়া ক্রোধাবিষ্ট চিত্তে হস্তিনাপুর প্রস্থান করিলেন, এবং অনতিবিলম্বে তথায় উপস্থিত হইয়া রাজা, জনমেজয়ের নিকট গমন করিলেন। রাজা পূর্বে তক্ষশিলা জয়ার্থ প্রস্থান করিয়াছিলেন, তথায় সম্যক জয় লাভ করিয়া প্রত্যাগমন করিয়াছেন। উতঙ্ক মন্ত্রিবর্গপরিবৃত সিংহাসননাপবিষ্ট রাজাকে, জয়োহস্তু, বলিয়া যথাবিধি আশীর্বাদ প্রয়োগ করিলেন। পরে অবসর বুঝিয়া সাধুশব্দালঙ্কৃত বাক্যে নিবেদন করিলেন, মহারাজ! তুমি কর্ত্তব্য কর্মে উপেক্ষা করিয়া বালক প্রায় কর্ম্মান্তরে ব্যাসক্ত হইয়া আছ।

 রাজা জনমেজয় এইরূপ ব্রাহ্মণবাক্য শ্রবণ করিয়া যথাবিধি অতিথিসৎকার সমাধান পূর্ব্বক কহিলেন, মহাশয়া আমার কন্তব্য কর্মে উপেক্ষা নাই, আমি প্রজাপালন দ্বারা ক্ষত্রিয়ধর্ম্ম প্রতিপালন করিতেছি। এক্ষণে আপনি কি উদ্দেশে আগমন করিয়াছেন, আজ্ঞা করুন। পুণ্যশীল উতঙ্ক মহাত্মা রাজার কথা শুনিয়া কহিলেন, মহারাজ! আমি যে কর্ম্মে অনুরোধ করিব, তাহা তোমারই কার্যা। যে দুরাত্মা তক্ষক তোমার পিতার প্রাণ হিংসা করিয়াছে, তুমি তাহাকে সমুচিত প্রতিফল প্রদান কর। ঐ বৈধ কর্মের অনুষ্ঠানকাল উপস্থিত হইয়াছে। অতএব মহার! স্বীয় মহাত্মা পিতার বৈর নির্যাতন কর। দুরাত্মা তক্ষক বিনা অপরাধে তোমার পিতাকে দংশন করিয়াছিল, তাহাতেই তিনি বজ্রাহত বৃক্ষের ন্যায় পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হন।

১১