পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/২৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( २8s ) দিওঁ মণ্ডল আচ্ছন্ন করিয়া অনবরত বারিবর্ষণ করিতেছিল, এবং মীরকাসেম যে পৈশাচিক অভিনয় করিতে কৃতসংকল্প হইয়া ঐ স্থলে সমাগত হইয়াছিলেন, তাহ দর্শন করিতে সংকোচিত হইয়াই ষেন দিবাকর স্বকীয় বদনমণ্ডল নীরদ-বসনে আচ্ছাদন করিয়াছিলেন। মীরকাসেম দরবারে উপবেশন করিয়া, বন্দিবগকে তথায় উপস্থাপিত করিবার নিমিত্ত আদেশ প্রদান করিলেন । রাজবল্লভ, কৃষ্ণদাস, রামনারায়ণ প্রভৃতি বন্দিগণ প্রহরি-পরিবেষ্টিত হইয়া দরবারে উপস্থিত হইলে, নবাব রাজবল্লভকে সম্বোধন করিয়া জলদগম্ভীর স্বরে বলিলেন,— “বন্দি ! অদ্য তোমার মৃত্যু অবগুম্ভাবী। তোমার যে ভাবে মরিতে বাসনা থাকে, স্পষ্ট করিয়া বল। আমি তোমার এই শেষ প্রার্থন পূর্ণ করিক্তে চেষ্টা করিব।” রাজবল্লভ নিষ্ঠাবান হিন্দু ছিলেন। জাহ্নবী-সলিলে দেহুপাত হইলে পরলোকে অমরধামে বিচরণ করিতে পারিবেন সেই বিশ্বাস তাহার হৃদয়ে বদ্ধমূল ছিল (১)। স্বতরাং তিনি বিনীতভাবে নিবেদন করিলেন,— “জাস্থাপনা ! এই বন্দীর শেষ প্রার্থনা পূর্ণ করিতে আপনার অভিপ্রায় হইলে, আদেশ করুন যেন জাহ্নবী সলিলে নিক্ষেপ করিয়া আমার সংস্থার করা হয় ।” (১) রাজকীয্য হইতে অপস্থত হইয়া, শেষজীবন পবিত্র তীর্থ ধারাণসী ধামে অতিবাহিত করিয়া, পুণ্যতোয় জাহ্নবীসলিলে জীবন ধিসর্জন করিবেশ, এই অভিপ্রায়ে তিনি মণিকর্ণিকার ঘাটে নবরত্ন, সপ্তরত্ন, এবং পঞ্চরত্ন নামক তিনটি সুরম্য মন্দির, এবং বাঙ্গালিটোলায় এক স্ববৃহৎ হাবেলী প্রস্তুত করিয়াছিলেম। মহাশ্মশানক্ষেত্রে তাহার ব্যয়ে এক শ্মশান নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। কথিত আছে যে, যপস-নিবাসী স্বপ্রসিদ্ধ রামানন্দ সরকার মহাশয়ের তত্ত্বাবধানে ঐ সমস্ত কাৰ্য্য নিৰ্ব্বাহিত হইয়াছিল।