পঞ্চর সম্বন্ধে তার কেমন একটা আশঙ্কা আছে প্রথম থেকে। আর কিছু না হোক, মানুষটা যে একটু হাল্কা প্রকৃতির, বড় বেশী কথা বলে আর গায়ে। পড়ে মানুষের সঙ্গে ভাব করার চেষ্টা করে। তাদের যা কাজ তাতে এ ধরনের লোক সঙ্গে না থাকাই ভাল। কে জানে, হয়তো নিছক বাহাদুরী করার জন্যই যার তার কাছে লঞ্চের গোপন অভিযানের কাহিনী বলে বসবে।
যাদববাবু বলেছিলেন, “না ভিমনা, বেশ চালাক চতুর আছে ছোকরা। নকুইলা সারাডা জীবন আমাগোর কাম করতেছে, তার পোলারে একটা কাম দিমু না? আমাগো নাগা পঞ্চর বইনরে বিয়া করব।”
ভিমন কতকটা নিশ্চিন্ত হয়ে বলেছিল, ‘হ’?
“আমারে জিগাইতে আইছিল নাগার হাতে বইনরে দেওনা উচিত হইবো কিনা। কথায় কথায় আমি কইছিলাম, পণের টাকাটা আমি দিয়া দিমু। পঞ্চ বারণ কইরা কইল, ওই টাকা নাগার কামান উচিত, দানের টাকায়। বিয়া করব ক্যান পুরুষ মানুষ? আগে পাজী ছিল পঞ্চটা, বেদম পাজী ছিল, অখন শুধরাইয়া গেছে।”
তারপর ভিমনা আর আপত্তি করে নি। সে নকুলের ছেলে, দুদিন পরে নাগা তার বোনকে বিয়া করবে, যাদববাবু নিজে তার হয়ে ওকালতি করছেন, এ অবস্থায় শুধু মানুষ চেনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে যে সন্দেহ জেগেছে তাকে কি মানুষ প্রশ্রয় দিতে পারে?
ডেনিসের আহবান আসবার আগে পঞ্চ একবার মোটে লঞ্চে পাড়ি দিয়েছে—নিতাই সাহার সামান্য একটা কাজ উপলক্ষে। সে সময় পঞ্চর চালচলন ভিমনার ভাল লাগে নি। সর্বদা সে লঞ্চের আনাচে কানাচে উকি দিচ্ছে, কানপেতে সকলের কথা শুনছে। আর চেষ্টা করছে, লস্কর থেকে আরম্ভ করে ভিমনার সঙ্গে খাতির জমাবার। *
এবার ভিমনা একবার দ্বিধাভরে যাদববাবুকে বলল, “পঞ্চারে এইবার। থুইয়া গেলে হয় না। কর্তা?”
“ক্যান?
নির্দিষ্ট কোন কারণ ভিমনার জানা নেই। তবু