যাদববাবু একটু হেসে বললেন, “পঞ্চকে তুমি ক্যান পছন্দ কর না, সন্দ ২৩. করি ভিমনা। চলুক, কি হইবো! কি কও?”
ভিমনা আর কি বলবে? সে চুপ করে গেল।
তারপর আগের বারের মত সন্ধ্যার পর ডেনিসকে তুলে নিয়ে “জলকন্যা’ যখন বাহির সমুদ্রের দিকে রওনা হ’ল তখন কেবল পঞ্চ কেন, আরও অনেক চিন্তাই ভিমনার মন থেকে মুছে গেছে। সকাল থেকেই আজ আকাশের অবস্থা ভাল নয়, এখন একটিও তারা চোখে পড়ছে না। ভিমর্ম যতবার ব্যারোমিটারের দিকে তাকিয়েছে ততবারই মুখ তার গম্ভীর হয়ে গেছে। আশ্বিন মাসের তুফানের পরিচয় সে জানে, সে তুফানের কবলে পড়লে “জলকন্যা’’ দশ মিনিট টিকবে কি না সন্দেহ। তুফান যদি ওঠে তার আগেই লঞ্চ নিয়ে বন্দরে ফিরে আসতে পারবে মনে হয়; ভিমনার যতদূর বিশ্বাস কালের আগে তুফান উঠবে না, কিন্তু প্রকৃতির * ক্লোন খেয়াল সম্বন্ধে কি নিশ্চিত হওয়া যায়, বিশ্বাস করা যায় ঝড় বাদলকে। সামান্য টাকার ব্যাপার হলে ভিমনা বন্দরের আশ্রয় আজ ছেড়ে তুমাসত না। কিন্তু এবার ডেনিস আগের বারের চেয়েও অনেক বেশী টাকার চালান আনাচ্ছে, যাদববাবুকে মোটা টাকা আগম দিয়েছে, ব্যবস্থার জন্য খরচও করছে অনেক টাকা। এখন কি তাকে ডোবানো যায়!
নাগার দৃষ্টিকে ফাকি দিয়ে এবার সমুদ্র গাঢ় অন্ধকারে আত্মগৈাপন করে থাকে, লঞ্চের আলোয় শুধু দেখায় তার কয়েকটা ঢেউ আর লঞ্চকে দোলা দিয়ে জানিয়ে দেয় নিজের অস্তিত্ব। দূরে তাকিয়ে লঞ্চের দোলনে নাগার মনে হয়, সমুদ্র আর অন্ধকার যেন এক হয়ে জমাট “বেঁধে ক্রমাগত উঠছে আর, নামছে। মেঘনার মোহনার কাছে জল এবার একটু বেশী ঘোলাটে মনে হয়েছিল, তা ছাড়া সমস্ত বর্ষাকালের অফুরন্ত বৃষ্টিপাত সমুদ্রে কোন রকম পরিবর্তন ঘটিয়েছে বলে টের পাওয়া যায় নি। কল্পনার * সঙ্গে না মেলায় নাগা একটু ক্ষুন্ন হয়েছিল। কিন্তু ঝড়ের সম্ভাবনা আর ভিমনার গম্ভীর মুখ তার মধ্যে যে উত্তেজনা জাগিয়ে তুলল তাতে সমস্ত ক্ষোভ চাপা পড়ে গেল। সমুদ্রের বদলে এখন শুধু অন্ধকার দেখেও তার