বুদ্ধির পরিচয় দেয়। কিন্তু এবার যাদববাবু একটু খুশীও যেন হলেন না, মুখের হাসি পর্যন্ত তাঁর মিলিয়ে গেল।
‘তুই য্যান বড় বেশী বুড়া হইয়া গেছস্ নাগা?’
পকেট থেকে মনিব্যাগ বার করে ভিতরটা দেখে আবার যাদববাবু সেটা পকেটে রেখে দিলেন। কথা না বলে চলে গেলেন কেবিনের দিকে। পরে ভিমনা এসে একটি চকচকে টাকা নাগার হাতে দিল।
‘কর্তা দিলেন।’
সে তো নাগা জানে, একবার যখন দেবেন বলেছেন মনিব্যাগে টাকা না থাকলেও যেখান থেকে হোক যোগাড় করে সঙ্গে সঙ্গে তার পুরস্কার তিনি পাঠিয়ে দেবেন সেটা আশ্চর্য নয়, কিন্তু তার জবাব শুনে হঠাৎ তিনি বিগড়ে গেলেন কেন? কেন এমন ধাঁধাঁয় ফেলে গেলেন নুগাকে? রাগ করার কারণ থাকলে যাদববাবু রাগ করুন। কিন্তু তাকে তো জানতে দেওয়া উচিত কেন রাগ করেছেন।
তার বুড়োমির পরিচয় পেয়ে যাদববাবু ক্ষুন্ন হয়েছেন। বুড়োমির পরিচয় সে কখন দিল? শখের জিনিস কিনে পয়সা নষ্ট করে মানুষ যদি বাড়ির লোকের কাছে গোপন রাখতে চায়, কেন গোপন রাখতে চায় সেটা অনুমান করতে কারও বুড়া হওয়ার দরকার হয় নাকি। সেও দু’চার বার শখের জিনিস কিনে হারু মাঝি যাতে টের না পায়, তার জন্য সতর্ক হয়ে থেকেছে। তার শখের জিনিস দু’চার আনার, যাদববাবুর শখের জিনিস অনেক টাকার জাহাজ, কিন্তু ব্যাপারটা আসলে তো একই! তাছাড়া, কম পক্ষে চারজন মাঝি লাগে এতবড় নৌকা কিনে রাখবার জন্য-মাধববাবুর সঙ্গে যাদববাবুর কদিন আগে কথাকাটাকাটি হয়ে গেছে। জাহাজ কেনার খবর শুনলে মাধববাবু রাগ করবেন। আর সেই ভয়ে খবরটা যাদববাবু গোপন রেখেছেন, এটা অনুমান করতে পারা কি বুড়োমির পরিচয়! কে জানে?
লঞ্চ থামা মাত্র একজন খালাসীকে যাদববাবু শহরের নিতাই সাহার গদীতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। নিতাই সাহার মস্ত কারবার, বড় বড় নৌকা বোঝাই চাল ডাল মশলাপাতি আর তামাকপাতা সে হরদম