পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরতলী “কাজ ? আর কি আমি কাজ করতে পারব যশোদা ? “কোন পারবে না ? কাঠের পা নিয়ে লোকে রোজগার করে খাচ্ছে না ? দেশে খবর দেবার কথা বলছিলাম, কাউকে যদি তুমি দেখতে চাও?’ কে আর আছে দেশে ধনঞ্জয়ের, কাকেই বা সে দেখিতে চাহিবে। এখন আর খবর দিয়া কাজ নাই, ভাল হইয়া রোজগারপাতি করার মত সুদিন যদি KONS OG VENO-- “আমার দেনাটাও তখন আস্তে আস্তে শোধ করে দিতে পারবে ।” যশোদার আর সব ভাল, মিষ্টি করিয়া কথা বলিতেও সে জানে, কেবল মাঝে মাঝে এই রকম এক একটা কথা বলিয়া এমন সে প্ৰাণে আঘাত দেয় মানুষের । এমন প্ৰাণে আঘাত পাইলেও যশোদার আশ্রয়ে যশোদার অল্পে প্ৰাণধারণ করিয়া থাকিতে থাকিতে কয়েকদিন পৱে যশোদার এই কথা মনে করিয়াই লজ্জােটা যে তার কম হইবে, প্ৰাণে একটু স্বন্তি বোধ করিবে, এসব অবশ্য ধনঞ্জয়ের খেয়াল হয় না । সামান্য একটু সাময়িক মনঃকষ্ট দিয়া অনেক দিনের অনেক বেশী মনঃকষ্ট নিবারণের এসব উপায়ের সঙ্গে তার পরিচয় নাই-ক’জন মানুষেরই বা থাকে । সুধীর প্রথমটা ধনঞ্জয়ের কাছে ভেড়ে নাই। ধনঞ্জয় হাসপাতাল হইতে বাড়ীতে আসিয়াছে, দু’তিন দিন এটা যেন তার অজানাই রহিয়া গেল। তারপর একদিন সকাল বেলা কাজে যাওয়ার আগে মুখে অস্বাভাবিক গাম্ভীৰ্য্য আনিয়া আস্তে আস্তে সে ধনঞ্জয়ের ঘরে গেল । “কেমন আছ ধনা’দা ? খাও, বিড়ি খাও একটা ।” ধনঞ্জয় বিছানায় উঠিয়া বসিয়াছিল । সুধীরের দেওয়া বিড়িটা ধরাইয়া সে বলিল, “বোসো দিকি ভাই এখেন্মে, তোমাকে একটা কথা সুধোই পষ্ট করে। যা হবার তাতো হ’ল, সব আমার আদেষ্টের দোষ, গোলমাল টোলমাল আমি আর করব না, মা কালীর দিব্যি। গাড়ীটা কে ঠেলে দিয়েছিল বল দিকিন ?? শুনিতে শুনিতে সুধীরের মুখ বিবণ হইয়া গিয়াছিল, বুকের মধ্যে চিপ টিপ করিতেছিল - ‘কে ঠেলে দেবে, কেউ ঠেলে দেয়নি।-বড়বাবু নিজে এসে সবাইকে জিজ্ঞেস করে রিপোর্ট দিলে-” “সে তো জানি, তুমি নিজে দ্যাখে নি কিছু ?” (9p