পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহয়তলী সুধীর মসগুল হইয়া আলাপ করিতেছে। চাঁপা বলিল, “ওষুধটা কবার খাওয়ার বুঝে নিচ্ছিলাম দিদি।” ওষুদটা খাইয়ে গল্প কর চাপা।” বলিয়া যশোদা চলিয়া আসিল। তারপর হইতে সুধীরকে চাপার যেন সৰ্বদাই দরকার হইতে লাগিল । দু’বেল ডাকিয়া পাঠায়, নিজে ’ আসিয়া সুধীরের সঙ্গে গুজ গাজ ফিসফাস করে, কি যেন একটা ষড়যন্ত্র আরম্ভ করিয়াছে দু’জনে । ও-বাড়ীতে গেলেই যশোদা দু’জনকে একসঙ্গে দেখিতে পায়। দু’একবার কালোকেও তাদের সঙ্গে দেখা গেল, তিনজনে হাসিগল্প করিতেছে। কথা বেশী বলিতেছে সুধীর,হাসি চাপাই হাসিতেছে বেশী, কালো হঁ করিয়া শুনিতেছে। যশোদা ওদের এড়াইয়া চলিতে লাগিল, চাপা যদি জগৎকে ছাড়িয়া সুধীরের দিকে ঝুকিয়া থাকে, যশোদার কিছু বলিবার নাই। নিজের ভালমন্দ চাপা ভাল করিয়াই বোঝে । চাপার জন্য সুধীরের দরিদ জাগিয়া তার জন্য দরদটা যদি একটু কমে তাহা হইলেই যশোদা এখন বঁাচে । কিন্তু কিছুতেই কিছু হইল না, যশোদাকে উপেক্ষা করার লক্ষণ সুধীরের দেখা গেল না । কয়েকদিনের মধ্যে চাপার সম্বন্ধে তার একান্ত উদাসীনতা দেখা গেল, চাপা ডাকিলে সব সময় সে যাইতে চায় না । কেবল চাপা যখন কালোকে পাঠাইয়া, তাকে বিশেষ দরকারে ডাকিয়া পাঠায়, তখন কালোর সঙ্গে সে মুখ গম্ভীর করিয়া শুনিয়া আসিতে যায় দরকারটা কি এবং গিয়াই ফিরিয়া আসে। অল্পক্ষণের মধ্যে । ধীরে ধীরে আবার যেন তার আগেকার অস্থিরতা ফিরিয়া আসিতে লাগিল। ধনঞ্জয় আর যশোদাকে একসঙ্গে দেখিলেই কোথা হইতে সে আসিয়া উপস্থিত হয়, কিছুতেই আর নড়িতে চায় না । যশোদাকে একা পাইলেই কাছে বসিয়া আবোল-তাবোল গল্প জুড়িয়া দেয়, ধনঞ্জয়ের যত পারে নিন্দ করে, তার জানা একটি স্ত্রীলোকের উপর ধনঞ্জয়ের কি গভীর অনুরাগ ছিল সেই গল্প ফেনাইয়া ফাপাইয়া এমন করিয়া বলে যে কথাটা সত্য না মিথ্যা জিজ্ঞাসা করারও প্রয়োজন হয় না । তারপর একদিন সুধীর বলে কি, “একটা কথা বলি শোন চাদের মা । শুনে রাগ কোরো না। কিন্তু। আমার কোন কু-মতলব নেই আগেই বলে রাখছি cडांभक ।' ,,ቖ