পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৪২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরতলী করে চলে যাব ভাবছিলাম।” সত্যপ্রিয় এবার রীতিমত গম্ভীর হইয়া গেল । “দু’চার দিনের মধ্যে চলে যাবে ভাবছিলে ? তা বেশ । একটা বাড়ী দেখে নাও, কলকাতায় বাড়ীর অভাব নেই। কিন্তু, একা একজনের জন্য একটা বাড়ী না নিয়ে মেসে হোটেলে থাকলেই সুবিধে হ’ত না ?” তখন যামিনী স্পষ্ট করিয়াই জানাইয়া দিল যে একা বাড়ী ভাড়া করিয়া থাকিবাৱ কথা সে ভাবিতেছে না, সকলকে সঙ্গে নিয়া যাওয়াই তার ইচ্ছা । সত্যপ্ৰিয় বলিল, “আমাকে তার ব্যবস্থা করে দিতে হবে, এই কথা বলছি তো ? মাসে মাসে বাড়ী ভাড়াটাও দিতে হবে নিশ্চয় ?” “আমার মাইনেটা কিছু বাড়িয়ে দিলে-” “কিসের মাইনে ? একজনকে বসিয়ে বসিয়ে মাসে দু’শো টাকা হাত খরচ দিলে কি আপিস চলে বাপু ? কাজকৰ্ম্ম শিখলে হয়তো একদিন মাইনে হবে তোমার, এখন আমার পকেট থেকে যে হাত খরচার টাকাটা দিচ্ছি, সেটা আর বাড়াতে পারব না । কমিয়ে দিতে হবে। কিনা কে জানে-বড় টাকার টানাটানি চলছে আমার ।” খুব সকালে যামিনী আসিয়া পৌঁছিয়াছিল, ঝগড়ার পর না খাইয়াই আবার বাড়ী ছাড়িয়া চলিয়া গেল। বিকালে অজিতের সঙ্গে সে গেল যশোদার বাড়ী । সত্যপ্ৰিয় চার টাকা পথ খরচ দিয়া জামাইকে দেশে পাঠাইয়া দিয়াছে যশোদা এ খবরটা জানিত। অজিত খবর দিয়াছিল। অজিত মহীতোষের বন্ধু, বুদ্ধিটাও মহীতোষের তেমন ধারাল নয় যে ঘরের কোন কোন খবর যে বন্ধুর কাছেও চাপিয়া যাওয়া উচিত এটুকু তার খেয়াল থাকিবে । সত্যপ্ৰিয়ের মনের কোন কথা কেউ কোনদিন ঘুণাক্ষরে টের পায় না, মহীতোষের মনের কথাগুলি বাতাসে উড়িয়া বেড়ায় । যামিনীকে দেখিয়া যশোদা একটু অবাক হইয়া যায়, তারপর তার প্রস্তাব শুনিয়া যশোদার একেবারে চমক লাগে । “আমার এখানে থাকবেন মানে কি গো জামাইবাবু ?? অজিত বুদ্ধিমানের মতো একটু তফাতে সরিয়া গিয়াছিল। যামিনী গভীরভাবে ६३१