পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৫২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@外旷可有时孔 লিখতে শুরু করার আগে শুধু আশা নয়, দৃঢ় প্রতিজ্ঞাও ছিল যে, একদিন আমি লেখক হবে । তবু নিজের স্বাধীন ইচ্ছায় সাগ্রহে ছাত্র হয়েছিলাম বিজ্ঞানের, অন্যাস নিয়েছিলাম অঙ্কশাস্ত্ৰে । আজ চর্চা নেই সময় আর সুযোগের অভাবে ; কিন্তু বিজ্ঞানকে আজও সমানভাবেই ভালোবাসি। লিখতে শুরু করেই আমার উপন্যাস লেখার দিকে ঝোক পড়লো। কয়েকটি গল্প লেখার পরেই গ্ৰাম্য এক ডাক্তারকে নিয়ে আরেকটি গল্প ফাদতে বসে কল্পনায় ভিড় করে এল ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র উপকরণ এবং কয়েকদিনে একটি গল্প লিখে ফেলার বদলে দীর্ঘদিন ধরে লিখলাম। এই দীর্ঘ উপন্যাসটি-এ ব্যাপারের সঙ্গে সাধ করে বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়ার সম্পর্ক অনেকদিন পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত থেকে যায়। মোটামুটি একটা ধারণা নিয়েই সস্তুষ্ট ছিলাম যে, সাহিত্যিকেরও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা প্রয়োজন, বিশেষ করে বর্তমান যুগে, কারণ তাতে অধ্যাত্মবাদ ও ভাববাদের অনেক চোৱা মোহের স্বৰূপ চিনে সেগুলি কাটিয়ে ওঠা সহজ হয়। পরে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাকে ভালো করে তলিয়ে বুঝে ‘কেন লিখি ?? তত্ত্বগত দিকটার সঙ্গে মিলিয়ে নেবার প্রয়োজন জরুরী হয়ে উঠলো সমাজ ও সাহিত্যের সম্পর্ক নিয়ে নানা এলোমেলো থিয়োরি ও তার ব্যাখ্যার আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার প্রয়োজনে । তখন অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে একটা আশ্চৰ্য কথাও স্পষ্ট হয়ে উঠলে যে, লিখতে আরম্ভ করার আগেও বলে দেওয়া সম্ভব ছিল-যদি কোনদিন আমি লিখি ঝোকটা আমার পড়বে উপন্যাস লেখার দিকে । আমার বিজ্ঞান-গ্ৰীতি, জাত বৈজ্ঞানিকের কেন-ধর্মী জীবন-জিজ্ঞাসা, ছাত্রবয়সেই লেখকের দায়িত্বকে অবিশ্বাস্য গুরুত্ব দিয়ে ছিনিমিনি লেখা থেকে বিরত থাকা প্রভৃতি কতগুলি লক্ষণে ছিল সুস্পষ্ট নির্দেশ যে, সাধ করলে কবি হয় তো আমি হতেও পারি ; কিন্তু ঔপন্যাসিক হওয়াটাই আমার পক্ষে হবে উচিত ও স্বাভাবিক । কথাটা কী দাড় করাচ্ছি ? আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞানের ছাত্র না হলে, কিঞ্চিৎ বিজ্ঞান চর্চা না করলে, উপন্যাস লেখা যায় না ? আজ পর্যন্ত যার উপন্যাস লিখেছেন তারা সকলেই