পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিহ্ন S of যে পাঠালেন বাণী দিয়ে, সেও তো একটা বড় সম্মান ? কত বিশ্বাস করেন বলতে আমাকে । এতবড় একটা দায়িত্ব-’ “এরকম দায়িত্ব পালনের অনুগত ভক্ত না থাকলে কি পাণ্ডাগিরি চলে ? বীণার এই ঘরে ঢোকার মন্তব্য আরও কাহিল করে দেয় অমৃতকে । মায়ের মতোই হয়ে উঠেছে মেয়েট । স্বামী পায় নি এখনো, বাপের উপরেই কথার ब्ल ८ ।। “চুপ কর বীণা। যা এ ঘর থেকে।” অরুণা ধমক দেয়। বীণা অবশ্য যায় না। সে বুঝতে পারে, মার সঙ্গে বাবার খাটি বিবাদ বাধে নি, বাবাকে দিয়ে মা কিছু করিয়ে নিতে চান। লাগাম চাবুক সব তাই মা সম্পূর্ণ নিজের আয়ত্তে রাখতে চান, অন্য কারো এতটুকু হস্তক্ষেপ তার পছন্দ নয়। বীণা তাই একটু তফাতে চুপ চাপ বসে পড়ে । এবার কথার ঝােঝ বাদ দিয়ে গভীরভাবে অরুণা বলে স্বামীকে, ওটা কর্মীর দায়িত্ব। তুমি তবে দুংখ কর কেন ? বিশ্বাসী দায়িত্ববান কমীির সম্মান তো পাচ্ছি। নেতা হবার সখ কেন তবে ? “কি জানি ।” “যাক গে। এবার পলিটিকস ছেড়ে দাও । কাজ নেই। আর তোমার পলিটিকস করে। ওসব তোমার কাজ নয়। মুখ হাত ধুয়ে এসো।” “কি বলতে চাও তুমি ? স্ত্রীকে নরম দেখে অমৃত এবার ক্রুদ্ধ হয়ে, “তোমরা ভাবে আমি বোকা হাবা গোবেচারী ভাল মানুষ, ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানি না ! এ বাড়ি করেছে কে ? ঠাকুর, চাকর, দরোয়ান নিয়ে, শাড়ি গয়না পরে এত যে আরামে আছে তোমরা - * ‘বীণা ? অরুণ দৃঢ়স্বরে, “তোর এত রাত হল কেন বাড়ি ফিরতে ? কোথা গিয়েছিলি ? বীণা জবাব দেয় না । সে জানে এটা আসলে তার বাবার কথায় জবাব, বাবাকে ধমক দিয়ে চুপ করানো। নইলে বাড়ি ফিরতে এমন কিছু রাত তার হয়নি যে কারণ জানিবার জন্য মা মাথা ঘামাবে। অমৃত একটা চুরুট বার করে ধরায়। অরুণা কি হাল ছাড়ল ? বাইরের জগৎ থেকে জীবনকে এবার সে ঘরের সীমায় এনে রাখবে ঠিক করেছে ? অথবা আরও কিছু বলার আছে তার ? ঠিক বুঝে উঠতে পারে না বলে অমৃত আবার পুরানাে কথাটাই জিজ্ঞেস করে, “আমার কি করার ছিল ?