পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিন্তামণি y মথুর ডাক্তার বলল, “ভয় নেই, সব ঠিক হয়ে যাবে। নাড়ী একটু দুর্বল, জরের লক্ষণটা ভাল নয়। এরকম পেট খারাপ থাকলে চলবে না । তা, একরকম ঠিক হয়ে যাবে ও সব। * মথুর ডাক্তারের অভয়বাণী শুনে রঘু হঠাৎ কেমন ভয় পেয়ে গেল। ডাক্তারের পরীক্ষার সময় সেও কাছে দাড়িয়ে মন দিয়ে দুৰ্গাকে দেখেছে। তারও জানা ছিল দুৰ্গা এবার মরতে পারে, আজকেই দুৰ্গা তার নজরে পড়েছে কয়েকবার, অথচ সে সত্য সত্যই জানত না এমন বিশ্ৰী হয়ে গেছে তার ছোট বৌটার চেহারা। গলা পৰ্যন্ত কঁাথা ঢাকা দিয়ে চিৎ হয়ে দুৰ্গা বিছানার সঙ্গে মিশে শুয়ে আছে, পেটটা শুধু তার উঁচু। শীর্ণ বিবৰ্ণ মুখের দুটি কোটরে জ্বরের ধমকে জল জল করছে কালো দুটি চোখ। বাড়ীতে ডাক্তার এলে এমনিই মনটা দমে যায় মানুষের, ভুলে যাওয়া রোগ শোক অজানা বিষাদ হয়ে ঘনিয়ে আসে, সমবেদনায়। থমথম করে অনুভূতির জগত। দুর্গার দিকে চেয়ে থেকে তার যে কঠিন অসুখ হয়েছে অনুভব করে রঘুর ভেতরে অস্থির অস্থির করছিল। মথুর ডাক্তারের মুখে রোগের আশাপ্ৰদ আলোচনা শুনে সেটা ভয়ে পরিণত হয়ে গেল । “বাচবে তো ডাক্তারবাবু? “বাঁচবে না ? কেন, ওর হয়েছে কি ! ছেলেপিলে হবে বলে একটু যা ভাবনার কথা, নইলে অসুখ তো সেরে যাবে দু'দাগ ওষুধে ।” ওষুধ লিখে দেবার কাগজ বাড়ীতে না পাওয়ায় মথুর চটে গেল। রোগের এই মরসুমের সময় চারদিকে তার অসংখ্য রোগী, তার কি বসে থেকে নষ্ট করবার মত সময় আছে ? “দাও বাপু, ওই ঠোঙ্গাটা এগিয়ে দাও।” ঠোঙ্গার কাগজেই মথুর ওষুধ লিখে দিল। তার নিজের দোকান থেকেই ওষুধ আসবে। এমনভাবে সে প্রেসকৃপসনে লেখে যে সে ছাড়া আর কারো পড়বার ক্ষমতা থাকে না। অনেকদিন কম্পাউণ্ডারী করে মথুর ছোটখাট একটি ওষুধের দোকান খুলে সস্তায় ডাক্তারী আরম্ভ করেছিল, চাষী মজুরদের মধ্যে তার খুব পশার। ফি সে যে শুধু কম নেয় তা নয়, তার সঙ্গে দরদপ্তর করে আরও দু’চার আন কমানো যায়, পয়সার বদলে ফলমূল ধান চাল দুধ দই দিয়েও তার পাওনা মেটানাে চলে। চাষীরা তাই অত্যন্ত পছন্দ করে তাকে। যাবার সময় মথুর বলে যায়, শুধু বার্লি আর ওই ফুডটা খাওয়াবে বাপু । যেমন বললাম তেমনি করে খাওয়াবে। ফুডটা কোথা পাবে জানিনা। আমার কাছে নেই। পাও যদি তো 可f{卒一(心芭}一及