পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

УNe शांत्रिक @हांत्रौ করা তার শক্তিতে কুলোয় না, ছোট খাটাে খুঁটিনাটি কাজ সে অবিশ্রাম করে * যেতে পারে। ছেলেমেয়ে গাই বাছুর নিয়ে যে গেয়ে চাষীর সংসার সেখানে এরকম কাজেরও অভাব নেই। বিরজার সেবাও দুর্গ করে, তার চুলের জন্ট ছাড়িয়ে, পিঠের ঘামাচি মেরে, পায়ের হােজায় তেল লাগিয়ে। এতে তাৱ আপসোস কিছু নেই । মনে নালিশ পুরে রেখে বিরাজাকে সে খুশী রাখতে চেষ্টা করে না, সতীনের মন যোগানোর স্বভাবটা তার আপনা থেকেই গড়ে উঠেছে। পায়ের নীচে দাড়াবার মাটি কোথায় নরম, কোথায় শক্ত টের পাওয়ার মত স্পষ্টভাবেই পরাশ্রয়ী মেয়েমানুষ জানতে পারে কোথায় তার আশ্ৰয় । মানিয়ে চলাটা তাদেব মজাগত ধর্ম হয়ে দাডায় । বুঘুর অবাধা হতে দুর্গা ভয় পায় না, কম্বরও করে না তাকে চাপা গলায় দু’চারটে মন্দ কথা শুনিয়ে দিতে। কিন্তু বিরজার সব কথা সে মেনে চলে। নিবিচারে মেনে চলে । এবার এক কাণ্ড করে বসেছে এই দুই সতীনে । দু’জনে পোয়াতি হয়েছে প্ৰায় এক সঙ্গে। ক্ষেতে ফসল কাটার কাছাকাছি সময়ে তাদের সন্তান ভূমিষ্ট হবার • ।। সে পর্যন্ত টিকে থেকে দুৰ্গা যদি অবশ্য হাঙ্গামাটা সইতে পারে। দুর্গার শরীর বড় খারাপ, তাকে বিছানায় শুয়ে থাকতে দিতে হয়েছে। সময় আসা পর্যন্ত সে বেঁচে থাকবে কিনা সন্দেহ জেগেছে সকলের মনে এবং এ বিষয়ে সকলেই প্ৰায় নিঃসন্দেহ হয়ে গেছে যে কোনরকমে। ততদিন বেঁচে থাকলেও প্রসবের ধাক্কাটা সে সামলাতে পারবে না। সন্তান ভূমিষ্ট হবার আগেই সে মারা যাবে। ডাক্তার কবিরাজ একথা বলেনি, অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলিয়ে নিজেরাই তারা জেনেছে। বাড়ীর মানুষ। শুধু নয়, গায়ের মেয়েরাও দেখতে এসে সায় দিয়ে গেছে এই আন্দাজে। গর্ভবতী স্ত্রীলোক যারা মরে ছেলে হবার সময় এমনি অবস্থাই তাদের হয় শরীরের প্রথম থেকে। এমনি যারা সুস্থ সবল তারাই এরকম অবস্থা হলে আর বঁাচতে পারে না, দুৰ্গা তো চিরদিন দু’ল, ক্ষীণজীবী । আপদ চুকে যায় তো যাবে, বিরজার মনে হয়েছে একথা । এরকম অনেক কথাই মানুষের মনে হয়, অধিকাংশ সময়েই কিছু তাতে এসে যায় না। তাছাড়া, ওকথা মনে হওয়ার মানে এই নয় যে আপদ চুকে যাবার প্রক্রিয়াকে বাতিল করার জন্য চেষ্টা করতে সাধ জগবে না। বিরাজা নিজেই গরজ করে রঘুকে দিয়ে দুর্গার চিকিৎসার জন্য মথুর ডাক্তারকে আনাল।