পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छिश६ि wo নুন আর তিন ছিদামের চিনি কিনে কিনে পয়সা পূরিয়ে সওদা করিয়ে ছিলেন মোট চার আনার — এক আনার নুন আর তিন আনার চিনি। তারপর একসঙ্গে পয়সা দিয়ে ওজন করে কিনিয়ে ছিলেন এক আনার নুন আর তিন আনার চিনি। ষোলবারে কেনা সমান পয়সার নুন। একবারে কেন নুনের হল অর্ধেক, চিনি তারও কম। ডগসন মাঠের এক সভায় রমেশবাবু তার এই অর্থনৈতিক পরীক্ষার কথাটা এমন ভাবে বুঝিয়ে বলেছিলেন যে গৌরের ধাধা। লেগে গিয়েছিল। তারপর ভেবে চিন্তে সে দেখেছে, এক-আধপয়সার জিনিষ কিনলে দোকানী ঠকায়, তার এবং সকলের এই জানা কথাটাই রমেশবাবু একটু অন্যভাবে জটিল করে বলেছেন । ছিদামের কারবার এখন আধপয়সায় উঠেছে। কারণ সবচেয়ে কম দামী জিনিষও ছিদামে যতটুকু দেওয়া হত, তার চেয়েও কম জিনিষ কোন কিছুর বিনিময়েও মানুষ মানুষকে দিতে পারে না । বুড়ী বলল, “তবে আদালার নুন আর আদলার হলুদ দাও।” ‘আরেক পয়সার ? 'डोंटू काश ।” “পয়সা আছে ? বুড়ী একটা আনী বাডিয়ে দিল। বাকী তিন পয়সা তার কিসের বরাদ্দ কে জানে ৷” বদ্যি মাথা নাড়ল ৷—“দু’। পয়সার কম সওদা নেই।” এতক্ষণে বুড়ী গেল চটে। — ‘নেই তো নেই। ভারি দুকান দিয়েছে।” বুডী চলে যায়। কিন্তু আধপয়সা একপয়সা করে” আন দু’আনার খদের ক্রমে বাড়তে থাকে। বদ্যি ক্ষিপ্ৰহস্তে একটু মসলা, এক চামচ সুন, আধপলা। তেল, কিছু চাল কিছু ডাল ইত্যাদি বেচিতে থাকে। এত তাড়াতাড়ি এত জনকে এত জিনিষ এত বিভিন্ন দামে সে বিক্রী করে। কিন্তু পয়সার হিসেবের জন্য তাকে ভাবতে হয় না, হিসাবে ভুলও হয় না একটা আধলার। দেখে, চাদকাকাকে জব্দ করতে সনৎ মোক্তারকে, আদালত আর আদালতের লোককে দিতে যা খরচ করেছে তার জন্য বড়ই আপসোস জাগে গৌরের। আত্মপ্ৰসাদের সঙ্গে জাগে । সে গরীব চাষী, কিন্তু এদের মত গরীব নয়। এরা সব বাড়তি ফেলনা মানুষ । চাষীও নয়, কুলীও নয়। দুধ দিতে গৌরকে আর নীলকণ্ঠের বাড়ী যেতে হয় না। দাম বাড়িয়ে দুবেলা