পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

65 পুলকেশের সিনেমা দেখার নেশা একেবারে ছিল না। যতীনেরও তাই। সত্যিকারের কোন ভাল ছবির খবর পেলে, রুচি, রসবোধ আর বিচারশক্তি আছে বলে তারা বিশ্বাস করে এমন কোন বিশ্বাসী লোকের কাছে খবর পেলে হয়তো কখনো নিজেরা শখ করে গিয়ে দেখে আসত ছবিটা । তাছাড়া ইচ্ছে করে কখনোই তারা সিনেমায় যেত না । মাঝে মাঝে তবু যে যেতে হত তার কারণ ছিল ভিন্ন । সিনেমা যাবার ভীষণ শাখ আছে অথচ কেউ না নিয়ে গেলে যেতে পারে না। এমন যার বা যাদের আব্দার এডানো চলে না, তাকে বা তাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে হত । ছায়াছবি যে একেবারে তারা দুবন্ধু উপভোগ করে না তা নয়। একটু উল্টোভাবে কিছু কিছু উপভোগ করে – দর্শকের যেরকম উপভোগের জন্য ছবিটা মোটেই তৈরী হয়নি। বাংলা আর হিন্দি ছবি হলেই পুলকেশ। আর যতীনের অভিনব উপভোগটা জমে বেশী । উদ্ভট অবাস্তব সৃষ্টিছাড়া একঘেয়ে কাহিনী, চরিত্রগুলির অমানুষিক খাপছাড়া আর সঙ্গতিহীন কথাবার্তা, চালচলন, ভাবভঙ্গি, যেখানে সেখানে গান, উৎকট হাসি কান্না আর ভাড়ামি ইত্যাদি তাদের হাসির অনেক খোরাক জোটায়। অন্য সকলের তন্ময়তার মর্যাদা রাখার জন্য যেখানে সশব্দে হাসা সম্ভব হয় না। সেখানে মুখে রুমাল গুজে হাসিটা চাপা দেয়। সময়টা তাই একরকম তাদের কেটে যায় হাই না তুলে, ঘুম না পেয়ে । মুন্ময়ী একদিন আশ্চর্য হয়ে পুলকেশকে বলেছিল, ‘তুমি কেঁদে ফেল্পে! দৃশ্যটা খুব করুণ সত্যি কিন্তু —” “কোন দৃশ্যটা ?” “মেয়েটা যেখানে রাতদুপুরে বাড়ী ছেড়ে চলে যাচ্ছে-” “ও দৃশ্যটা করুণ নাকি ? আমার তো ভারি কমিক লাগিছিল। এত কাণ্ডের