পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ কাল পরশুর গল্প 39S আর সহজবােধ্য। এসব বিষয়েও ষে কৈলাস মাথা ঘামায়, এতক্ষণ এমন তেজের সঙ্গে তর্ক করতে পারে, কেউ তা কখনো কল্পনাও করেনি। তারপর কৈলাস বলল, “যাকগে, ওসব বড় বড় কথা আমার মাথায় ঢুকবে না। একটা কথা জিজ্ঞেস করি আপনাকে । আপনি তো মিউনিসিপ্যালিটিতে আছেন, নিজের চােখে ওদের পাড়ার অবস্থা দেখেছেনও অনেকবার, যেমন ধরুন নকুড়ের বাড়ীর সামনে 3irgit কেদার তাড়াতাড়ি বলল, চেষ্টা তো করছি। একা কী করব ? কৈলাসও তাড়াতাড়ি বলল, “এক কেন ? অন্য সকলকে বোঝাতে পারেন না ? ওঁরা সব শিক্ষিত ভদ্রলোক, ওঁদের যদি না বোঝাতে পারেন- * ইঙ্গিতটা সুস্পষ্ট। কেদার অবজ্ঞােভরা তামাসার সুরে বলল, “আপনি পারেন ? দেখুন না একবার চেষ্টা করে !” কৈলাস গভীরভাবে বলল, “তাই ভাবছি। তবে ঢুকতেই যা হাঙ্গামা, ভাবতেও ভয় করে । আপনার তো সব জানাই আছে ?” কেদার আশ্চৰ্য হয়ে বলল, “বলেন কি মশায়, আপনি এবার দাড়াবেন নাকি ?” কৈলাস সায় দিয়ে বলল, “দেখি একবার চেষ্টা করে । আপনি এক কাজ করুন না, আপনি নিজে না ঢুকে আমায় ঢুকিয়ে দিন না ? প্ৰস্তাব শুনে সকলে স্তম্ভিত হয়ে বসে রইল। কৈলাসের মতো স্বার্থপর মানুষের পক্ষেও কি এমন একটা খাপছাড়া প্ৰস্তাবকে স্বাভাবিক মনে করা সম্ভব ? সেদিন সন্ধ্যার সময় কৈলাস বাড়ীতে বসে আছে, দু’টি কিশোর তার সঙ্গে দেখা করতে এল । কৈলাস দেখেই চিনতে পারল, সকালে তারা কেদারের বৈঠকখানায় বসেছিল। ‘কী মনে করে ভাই ? “আপনার সঙ্গে একটু কথা বলতে এলাম।” তখনও নির্বাচনের মাস ছয়েক দেরী ছিল । কিন্তু ধরতে গেলে সেদিন হতেই দু’জনে লড়াই সুরু হয়ে গেল। নির্বাচনের মাসখানেক আগে দেখা গেল। লড়াইট বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রথমটা কৈলাসের বোকামিতে সকলে অবাক হয়ে গিয়েছিল, ভেবেছিল লোকটার মাথা বুঝি খারাপ হয়ে গিয়েছে। কেদারের মতো সুপ্রিতিষ্ঠিত জনপ্রিয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে তার মতো লোকের দাড়ানোর কোন মানে হয় ? কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে দেখা গেল, কৈলাস খুব বেশী বোকা নয়। তার দিকেও অনেক সমর্থক জুটে গেছে! যতই জনপ্রিয় হোক, কেদারের শত্রু ছিল