পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্রন্থাবলী শুনে রামপাল অনেকটা নিশ্চিন্ত হল। কিন্তু পুরোপুরি খুসী হতে পারল না । মনে তার কি যেন একটা প্যাচ আছে, মানুষের এই নিক্রিয় ভালোমানুষী চিরদিন তার মধ্যে অসমর্থন জাগিয়ে তোলে, মৃদু অসন্তোষ সৃষ্টি করে। কেবলি মনে হয়, এরকম হওয়া যেন উচিত ছিল না । নিজে সে সবরকম হাঙ্গামা এড়িয়ে চলতে ভালবাসে কিন্তু অন্যের বীর্যহীন সহনশীলতা তার সয় না । তার দিক থেকে ভালই হয়েছে যে ঝুমুরিয়া চুপ করে গেছে, রাস্তাকে ক’দিন বাপের বাড়ী থাকতে দেওয়া চলবে, কাল পরশু টেনে হিচড়ে তাকে কলকাতা নিয়ে যাবার দরকার হবে না, কিন্তু রাস্তার ভাইগুলি, বীরেশ্বরের যোয়ান মর্দ ছেলেগুলি ? ঝুমুরিয়ার পুরুষগুলি ? ছিা! নতুন রাস্তা ঝুমুরিয়ার কাছাকাছি ষ্টেশনের এই পথকে অতিক্রম করে ঝুমুরিয়ার গা ঘেষে গেছে। মোড়ের কাছাকাছি নতুন রাস্তার কাজ এখনো কিছু কিছু চলছে। মোড়ে দাড়ালে দেখা যায়, রাস্ত কতদূর এগিয়েছে। প্রায় সিকি মাইল দূরে বঁাকের কাছে দু’পাশে সারি সারি খোয়ার স্তপ, আধ পেশা রাস্তায় ছোট বড় তিনটে রোলার, বাকের ওদিকে হয়তো আরও আছে। নবীন সামন্তের আমবাগানের প্রান্তে তিনটি ছোট ছোট তাবু আর তালপাতার ছাউনি দেওয়া অস্থায়ী ঘর। একটি তাবুর সামনে ভুর করে রাখা দুর্যমুস, গাইতি, কোদাল প্ৰভৃতি যন্ত্রপাতি। পথের ওপাশে এক সারি গরুর গাড়ী, গাড়োয়ানেরা গরু খুলে প্ৰকাণ্ড এক শিমূল গাছের নীচে তাদের বেঁধে খড় ও জল দিচ্ছে, গলায় বাধা ঘণ্টার সমবেত টুইটাং শব্দ কানে আসছে অনেক মন্দিরে অনেক সন্ধ্যারতিব ইঙ্গিতের মত। একটা লরী এতক্ষণ দাড়িয়ে ছিল, এবার সশব্দে সমুখ দিয়ে ষ্টেশনের দিকে চলে গেল। আজের মত কাজ শেষ হয়েছে, কুলীরা অনেকে চলে গেছে, অনেকে এখনো যাচ্ছে । বঁাকের কাছে রাত্রির বিরামের ব্যবস্থায় কতকগুলি মানুষ ব্যস্তভাবে এদিক ওদিক চলাফেরা করছে। এখানে ওখানে জলছে ছাড়া ছাড়া কয়েকটা আগুন । এই মোড় আর ওই বঁাকের মাঝামাঝি এক অনির্দিষ্ট স্থানের দিকে হাত বাড়িয়ে কণ্ঠস্বরকে যথাসম্ভব শোচনীয় করে দিবাবু বলল, “ওই হোথা সামন্ত মশায় ९gलि c200छ ।' গাড়ী থেমেছিল, আবার চলতে আরম্ভ করল। রম্ভ একটু কঁাদল। গভীর উপভোগ্য বিষাদ ঘনিয়ে এসে রামপালের মন হয়ে গেল। উদাস ৷ চচা করে করে SR