পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দর্পণ ‘আমি ভাবছিলাম কি জানেন ? সামনের বুধবার মাসের পয়লা তারিখ, একেবারে বুধবার না হোক, সামনের সপ্তাহের মধ্যে যদি শশাঙ্কবাবু কাজে লাগেন মাসের পুরো মাইনেটা পাবেন।” “সামনের সপ্তাহেই যাবেন,-সোম মঙ্গলবার।’ “সেই ভাল। এখানে এসে বসুন না ? ওঠবার চেষ্টা দিগম্বরী করে। ওঠে না । হীরেন সিগারেটটা মেঝেতে ফেলে জুতা দিয়ে পিষতে থাকে। তারপর জুতো খুলে বিছানায় পা তুলে বসে। তারপর দিগম্বরী উঠে দাড়ায়। কিছুক্ষণ দাড়িয়েই থাকে। তারপর এক পা এক পা করে এগিয়ে হীরেনের বিছানার কাছে এসে দাড়িয়ে থাকে । আর একটু বাকী, তারপর হীরেন। ওকে মুক্তি দেবে। হাতটি শুধু ধরবে একবার। হাত ধরলে দিগম্বরী কি করে দেখে সে হাসিমুখে সহজভাবে বলবে *আচ্ছা, আপনি এবার যান ।” লণ্ঠনের কাছে আসায় দিগম্বরীকে স্পষ্ট দেখাচ্ছে । হঠাৎ তার হাত ধরতে হীরেনের সাহস হল না । তার খেয়াল খেলার সীমানা পার হয়ে যেন এতক্ষণে দিগম্বরী রক্তমাংসের মানুষ হয়ে উঠেছে। হীরেন কোনদিন ভাবতেও পারে নি মানুষ এমন রূপসী হতে পারে! ঝুমুরিয়া ঘুমিয়ে আছে—চারিদিকের সমগ্ৰ ঝুমুরিয়া। এতবড় বাড়ীর একটী ঘরে জেগে আছে শুধু সে আর এই মানবী। এত কাছাকাছি জেগে আছে ! দিগম্বরীর ডান হাতের কজি চেপে ধরার পর হীরেনের খেয়াল হল সে তার হাত ধরেছে। "বোসে ।” ‘বসবে না ? “না। আমি যাই।” হীরেন তার হাত ছেড়ে দিয়ে মাথা নীচু করে বলল, “আচ্ছ, যান। আমি ভোরে উঠেই চলে যাব।” দিগম্বরী গেল না। চুপ করে দাড়িয়ে রইল। ‘শশাঙ্কদা গেলেই চাকরী পাবেন।” R&\o