পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা মা, যা খুশী করুন, তার অজুহাত আছে, তিনি সেকেলে মানুষ। শ্বশুর শাশুড়ীর গুরুদেবের ভাই বলিয়াই একটা মানুষের কাছে স্ত্রীকে ভক্তিতে গদগদ হইয়া উঠিতে CSश! शश की । স্বামীর নির্দেশ মত অভিনয় করিয়া লাবণ্য সবে বসিয়াছে, মা আসিলেন । “প্ৰণাম করেছ বৌমা ? জগদানন্দ বলে, “থাক থাক, প্ৰণাম দরকার নেই।” লাবণ্য কাঠের পুতুলের মত বসিয়া থাকে। একবার সে যেন প্ৰণাম করার জন্য উঠিবার চেষ্টা করে, মোহনের দৃষ্টপাতে সাহস পায় না। ছেলের রুক্ষ গলার কথা মা সহা করিয়াছিলেন, বৌ-এর অবাধ্যতা তার সহ হয় না। ‘সাধে কি তোমার এ অবস্থা হয়েছে বাছা ? পাচ বছর বিয়ে হয়েছে, আজও পেটে ছেলে ধরতে পারলে না, শুয়ে শুয়ো ব্যথায় কাতরাও । আমরা হলে বিদ্ব্যের অহঙ্কারে ফেটে না পডে গলায় দড়ি দিতাম।” b পীতাম্বর বলিয়াছিল। সে দুদিন পরে রওনা হইবে। সাতদিন পরেও সে না। আসায় মোহন যখন ভাবিতে আরম্ভ করিয়াছে, কলিকাতা আসিবার কথাটা তার ফাকি, ভাওত দিয়া গাড়ী ভাড়া আর সংসার ' খরচ বাবদ কিছু টাকা আদায় করাই তার আসল উদ্দেশ্য ছিল, তখন পীতাম্বরের খবর পাওয়া গেল। বিনা টিকিটে কলিকাতা আসিবার চেষ্টা করিতে গিয়া কয়েক দিনের জন্য হাজতে যাওয়ার উপক্ৰম করিয়াছে। হইয়াছে জরিমানা, সে টাকা না দিতে পারিলে অগত্যা হাজতবাস । পীতাম্বর ভাবিতেও পারে নাই টিকিট না করার জন্য কাউকে রেল কোম্পানী আবার জেলে পাঠানোর হাঙ্গামা করিতে পারে। বড় জোর টানিয়া নামাইয়া দেয়, তার বেশী কিছু নয়। গাড়ী তে কলিকাতায় যাইবেই, জায়গারও কোন অভাব নাই গাড়ীতে, একটা মানুষ বিনা টিকিটে উঠিলে কি এমন আসিয়া যায় কোম্পানীর ? রাখাল সরকার কতবার ওভাবে কেতনপুর যাতায়াত করিয়াছে। মোহন গিয়া তাকে ছাড়াইয়া আনিবার পর এই আপশোষটাই তার বড় দেখা গেল যে অন্য সকলে দিব্যি বিনা ভাড়ায় ট্রেণে চাপিয়া বেড়ায়, জীবনে একটিবার RS