পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা হয়েছে শুনলে সেই হয়তো ব্যস্ত হয়ে সহরের আরেক প্ৰান্তে ছুটে দেখতে যায় ! গ্রামের লোকের আরেক পাড়ার বাডীর সঙ্গে পাশের বাড়ীর সম্পর্ক রাখা চলে, কারণ সত্যই হয় তো দুটো বাডীর মধ্যে আর একটিও বাড়ী নেই। সহরে পাশের বাড়ীর সঙ্গেও সে সম্পর্ক রাখা চলে না। সহরের পক্ষে সেটাই নিয়ম। মানুষের সময়, ধৈৰ্য্য, সহানুভূতি কিছুই তো অসীম নয়।” সন্ধ্যা দমিয়া গিয়াছিল। পরাজয় স্বীকার করার মতই আলগোছে সে বলিল, “যাই হোক, সহরে পাপ বেশী।” “কোন হিসাবে পাপ বেশী ? সহরে লোকসংখ্যা আর পাপের পরিমাণ হিসাব করে দেখেছেন ?” ‘না তা দেখিনি ।” मन्क्षा शशि।। 6न्निव । জগদানন্দ হাসিল না, গভীর আপসোসের সঙ্গে বলিল, “সহর সম্বন্ধে আপনাদের কত রকমের যে ভুল ধারণা, ভাবলেও দুঃখ হয়।” নড়িয়া চড়িয়া জগদানন্দ সোজা হইয়া বসে। সহর সম্পর্কে আলোচনায় তার আগ্রহ এবং উৎসাহের আতিশয্যা মোহনের বিস্ময়কর মনে হয় । কেবল তর্ক করিয়া নিজের মতামত প্ৰতিষ্ঠা করা নয়, সহরকে যেন মানুষটা প্ৰাণ দিয়া ভালবাসে । সহরকে সমর্থনা করিয়া ধীরে ধীরে সে নিজের বক্তব্য বলিয়া যায়, রাত্ৰি যেন গভীর হইয়া আসে নাই, সারাদিনের হাঙ্গামা ও উত্তেজনায় কেউ যেন এতটুকু শ্ৰান্ত নয়! লিখিত বক্তৃতার মত তার গুছানো কথাগুলি শুনিলেই বুঝিতে পারা যায় এ বিষয়ে সে কত চিন্তা করিয়াছে। শুনিতে শুনিতে নিজেকে সত্যই একটু বিপন্ন মনে হয় মোহনের। কতগুলি বিশ্বাস ও ধারণায় তার সুনিশ্চিত নির্ভর ছিল, খেলনা।--বেলুনের মত সেগুলিকে এখন মনে হয় ফাপ । t লাবণ্য ও মন দিয়া শুনিতেছিল। চোখ দু’টি তার ঘুমে ঢুলু ঢুলু। সেই চোখের দিকে চোখ পড়ায় জগদানন্দ হঠাৎ থামিয়া গেল । ‘ইস, আপনাদের ঘুম পেয়েছে!” “আপনার পায়নি ? লাবণ্য আশ্চৰ্য্য হইয়া জিজ্ঞাসা করিল। প্রশ্নটা ছেলেমানুষী । দশ বছরের মেয়ের মুখে মানাইত। প্রশ্ন করার ভঙ্গিতে VR