পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা সঙ্গেও তার বেশ খানিকূট খাতির জমিয়াছে। কিন্তু কদম কাছে না থাকিলে কে আছে শ্ৰীপতির ? কদম না থাকিলে কি মানে হয় বন্ধু থাকার! কদম থাকিলে কত ভাল লাগিত সহরে নতুন মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়িয়া তোলা । সহর আর তেমন বিস্ময় জাগায় না, হঁা করিয়া কারখানার যন্ত্রপাতি দেখা আর নতুন কাজ শেখ আর তেমন ভাবে আনমনা করিতে পারে না। চাঁপার ঘরে নেশার ধাঁধা, আর প্রচণ্ড স্ফীতির আকর্ষণ ভেঁাতা হইয়। গিয়াছে। জ্যোতি সঙ্গে নিতে চাহিলে বুকটা ধড়াস করিয়া ওঠে। সে বাড়ী না থাকায় কদম ওদিকে বাড়ীতে নিজের পাহারা বসায় । এখানে চাপার ঘরে গিয়া সে মজা করিবে ? এত কষ্টের পয়সা নষ্ট করিবে ? ‘না ভাই ভাল লাগে না ।” “ধেৎ । ভাল লাগবে । চ' ।” 'না, পয়সা নেই।” জ্যোতির সঙ্গে না যাক, এক একদিন চাপার কাছে না গিয়া সে কিন্তু থাকিতে পারে না । কদমের জন্যই যাইতে হয়। দীর্ঘ বিরহের পর কদমের সঙ্গে দুদিনের মিলন এবার তাকে যেন কি করিয়া দিয়াছে, প্রথম যৌবনে বৌকে প্ৰথম ঘরে আনার প্ৰথম দিকের রোমাঞ্চকর তেজ, ধৈৰ্য্যহীন অফুরন্ত আগ্রহ যেন আবার মাথা চাড়া দিয়া উঠিয়াছে, ভবিষ্যতের হিসাব নিকাশের কোন জবরদস্তি যেন মানিতে চায় না। কদমের জন্যই নূতন যৌবনের জোয়ারের মত এই উন্মাদন। কিন্তু কদম অনেক দূরে। আজ নয়, কাল নয়, আগামী মাসে নয়, কে জানে কবে কদমকে কাছে আনা চলিবে । চাপা কাছেই থাকে, যাইবে কি যাইবে না। ভাবিতে ভাবিতেও চাপার ঘরে গিয়া পৌছানো যায়। চাপা খুশী হইয়া আদর করিয়া বসায়, হাসিমুখে জিজ্ঞাসা করে, “একলা কেন গো ? সাঙ্গাৎ কই ?” শ্ৰীপতি ঢোক গিলিয়া আমতা আমতা করিয়া বলে, “আজকে আমিই এলাম 5ts \OS