পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী মানুষটি। স্বামীর একটা বন্ধু ছিল,—অঘোর। সে আসিয়া দুর্গকে রাখিল এখানে। মাস দুই পরে সেও ভাগিয়াছে।” ‘কপালের দোষ তাই মুটিয়ে গেলাম, ছেলেপিলে হল না। ছেলেপিলে হলে তেনার স্বভাব কি বিগড়াত ? এরকম মুটকি না হলে কি আরেকজন দু'মাসে মায়া কাটিয়ে ফেলে পালাত ? | দুর্গাকে দেখিয়াই শ্ৰীপতির ভয় আর সঙ্কোচ জাগিয়াছিল। তার པ་ནེ་ 5丽 শোনার পর গা যেন তার ছম ছম করিতে লাগিল। এখন দুৰ্গা অপবিত্র হুইয়া গিয়াছে, তাকে স্পর্শ করিলে আর দোষ হয় না, এই অকাট্য যুক্তিটা সে অবশ্য এখনো মনে মনে অ্যাকড়াইয়া ধরিয়া আছে। তৰু তার কেবলি মনে হইতেছে সে যেন একটা মহাপাপ করিয়া ফেলিয়াছে। কেবল তার জন্যই আজ একটি পর্যন্ত্রী অসতী হইয়া গেল । পীতাম্বর ডাকিয়া বলিল, “কোথায় যাস ছিপতি এত রাতে ? “আজ্ঞে একটু কাজ ছিল।” আলো জালিয়া এখনো পীতাম্বর দু’আনা দামের একটি খাতায় হিসাব লিখিতেছে। অনেক রাত করিয়াই বোধ হয়। সে ফিরিয়াছে, আজকাল প্ৰায়ই তার ফিরিয়া আসিতে দশটা এগারটা বাজিয়া যায় । পীতাম্বরের চালচলন আজকাল রীতিমত রহস্যময় হইয়া উঠিয়াছে। মানুষটাও সে বদলাইয়া গিয়াছে অনেকখানি। আগে মুখ দেখিলেই মনে হইত সর্বদা সে যেন কি একটা ধাপ্লাবাজির মতলব অ্যাটিতেছে, প্রার্থনা জানাইয়া ভিক্ষা করিয়া ভঁওতা দিয়া। কারে কাছে কিছু আদায়ের চেষ্টার মত কোন প্যাচালো মতলব অ্যাটিতেছে। আগে তার নিরীহ ভাবটা ছিল তাদের মত, পরের দয়ায় যারা বাচিয়া থাকে, এতটুকু অপরাধ করিয়া ফেলার ভয়ে সর্বদ। যারা সচকিত । এখন তার মুখে কোন চিন্তারই ছায়া দেখা যায় না, প্রশান্ত মুখে স্থির দৃষ্টিতে সে জগতের দিকে তাকায়। তার যেন কোন দুঃখ নাই, নালিশ নাই, অভাব নাই । আপনজনদের ফেলিয়া আসিয়া মোহনের এই গ্যারেজের ঘরটিতে আশ্রয় পাইয়া সকাল হইতে রাত দশটা পৰ্য্যন্ত বাহিরে ঘুরিয়া বেড়াইয়া তার যেন সন্তোষের সীমা माझे । অসহায় নমতার বদলে २ाडीद्र অমায়িকতার সঙ্গে সে ব্যবহার করে । কথা বলে কম, আর কেমন যেন দূরে সরিয়া থাকে। ঘনিষ্টতা করিবার চেষ্টা করিলে যেন আরও দূরে সরিয়া যায়। V06t WV