পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী যখন বলে একেবারে চুটাইয়া বলে, তবে জ্যোতির মত তার এই একটিমাত্ৰ রসই সম্বল নয়। 莺 প্যাচ কষে না, কায়দা করে না, সোজা স্পষ্ট কাটাকাটা কথা বলে, তবু জীবনের কত রকমারী দিক, আশ্চৰ্য্য দিক রূপ নেয়। ভূপালের কথায়। মনে হয় প্রতিদিন তার যে নতুন অভিজ্ঞতা জন্মিতেছে একেবারে অজানা বিষয়ে ভূপালের বর্ণনার সঙ্গেও যেন তার কেমন একটা মিল আছে। মজুরের লড়াই-এর কথা শুনিতে শ্ৰীপতির খুব আগ্রহ জাগে। কিসের वैछाड्ने আর কেন লড়াই তার আসল কথাটা সে হাড়ে হাড়ে বুঝিয়া গিয়াছে। এসব তারও লড়াই, তার স্বার্থের সঙ্গেও এসব জড়িত । মজুরি বাড়ানোর লড়াইটাই ধর। মজুরি বাড়িলে সে কদমদের আনিতে পারে। কাজ শিখিলে তার মজুরি বাড়িয়া কাজ পাকা হওয়ার কথা। নিজের ছোট গেয়ে কামারশালায় হাতুড়ি পিটিয়া তার জীবন কাটিয়াছে, কি এমন কঠিন কাজটা তাকে এখানে করিতে দেওয়া হইয়াছে যে এতদিনেও ভাল করিয়া কাজ শিখিতে বাকী থাকিবে ? কিন্তু কেউ একথা কানেও তোলে না যে সে ভাল কাজ শিখিয়াছে, এবার তার পাকা কাজের মজুরি পাওয়া উচিত! ভূপাল এক গাল হাসিয়া বলে, “যা যা বড়াই করিস নে! এর মধ্যে কাজ শিখে গেছেন, পাকা কাজ চাই, বেশী হস্তা চাই। তোর শাল ঢ়ের দিন বাকী কাজ শিখতে ।” “কাজ শিখিনি ? ঠিকমত কাজ করছি না ?” “শিখেছিস তো শিখেছিস ; ঠিকমত কাজ করছিস তো করছিস । তাতে কি হয়েছে রে ব্যাটা ? সময় হবে, মজি হ’বে, তবে কাজ পাকবে।” সুর পাণ্টাইয়া মুখ বাকাইয়া একজন মধ্যস্থ কৰ্ত্তব্যক্তির হাবভাব নকল করিয়া ভুপাল বলে, “তেড়ি-বেড়ি করিস নে বাবা, তেড়ি-বেড়ি করিস নে-দোহাই তোরা তবু তো খেটে খাচ্ছিস ? খেদিয়ে দিতে জবরদস্তি করিস নে বাবা, করিস নে-দোহাই তোর। আখেরে ভাল চাস তো চুপচাপ খেটে যা। গা থেকে পাকের গন্ধ যায়নি, কাজ শিখে গেছিল!” শ্ৰীপতি হাসিয়া ফেলে। \97R