পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

可弧夺玄 দৌড়ালেই প্ৰসাদকে হাপরের মতে। হাঁপাতে হয়, সুতরাং হাফ ধরবার আগেই বাতাসের প্রথম ধাক্কায় সে মুখ থ'বড়ে পড়ে গেল। উঠে বসা মাত্র ধুলো আর বালিতে দুটি চোখ যেন তার অন্ধ হয়ে গেল। একটা শুকনো ঝাকাটির চারা গড়িয়ে এসে তার গায়ে আটকে গেল, শুকনো পাতা তার গায়ে মাথায় ক্ষণিকের জন্য লেপটে থেকে ছিটকে উড়ে যেতে লাগল, একটা শুকনো ডাল কোথা থেকে এসে লাঠির মতো আঘাত করল তার ঘাড়ে ! তারপর নামল বৃষ্টি। ঝড়ের শক্তি আর কলরব যেন দশগুণ বেড়ে গেল। দুটি বুড়ো আঙলি দুকানে ঢুকিয়ে হাতের তালুতে মুখ ঢেকে প্ৰসাদ তখন উপুড় হয়ে শুয়ে পড়েছে। ঘরের জানাল দিয়ে বাইরে তাকিয়ে জীবনে কখনো সে ঝড়ের মৃতি চেয়ে দ্যাখেনি। ঝড় উঠলে সে ঘরের কোণে মুখ গুজে চোখ কান বন্ধ করে থাকে, মাঝেমাঝে মুখ দিয়ে বার হয়। ভয়ের ওঁ-ওঁ কাতরানি । ক’ত কালবৈশাখী আব্ব আশ্বিনের ঝড় এসেছে, গাছপালা ঘরবাড়ি ভেঙে চারিদিকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে, প্ৰসাদের নাগাল কখনো পায়নি । আজ তাকে আয়ত্তে পেয়েই যেন নববর্ষের প্রথম কালবৈশাখী উল্লাসে আরও বেশি ক্ষেপে গেল। বৃষ্টিধারাকে গুড়িয়ে গুড়িয়ে গায়ে তার প্রচণ্ড বেগে ঝাপটা মারতে লাগল। ক্রমাগত, চারিদিকের গাছে আর্তনাদের অসীম সমারোহ তুলে মডমড শব্দে ভেঙে ছিড়ে ¢कलgङ ना?ाल 6छ्छेदएछ ७ाल, দূর থেকে পাঠাতে লাগিল কোটি হিংস্ৰ জীবের ফুসে ফুসে শাসনের আওয়াজ। একটা কিশোর তেঁতুল গাছ গুড়ির কাছে মটকে ভেঙে আছড়িয়ে পড়ল, ডগার সরু সরু ডালপালাগুলি অসংখ্য চাবুকের মতো একসঙ্গে আঘাত করল প্ৰসাদের পিঠে। সেই মুহুর্তে ঠিক মাথার উপরের অবনত আকাশে প্ৰচণ্ড রবে গর্জন করে উঠল বাজ । তখন ধীরে ধীরে প্রসাদ উঠে বসল। অন্ধ ভয়ে মনে মনে সে মুহুমুহুঃ মরছিল, তার চেয়ে ভয়ঙ্কর মৃত্যুভয় জাগায় তার খেয়াল হয়েছে যে এখানে এভাবে পড়ে থেকে সত্যসত্যই মরা চলে না। বাঁচবার চেষ্টা করতে হবে। গাছের ডালের আঘাতে পিঠের অসহ্যু যন্ত্রণা এবার বীভৎস শিহরণের মতো বারবার তার সর্বাঙ্গে বয়ে যেতে লাগল। এত জোরে সে দাতে দাত চেপে ধৱল যে মাথাটা তার থারথার করে কঁাপিতে লাগল। তবু বমির বেগ ঠেকানো গেল না, দুহাতে ভর দিয়ে উবু হয়ে সে হীড়হড় করে বমি করে ফেলল। এমন হাস্কা মনে হতে লাগল নিজেকে যে শুকনো পাতার মতো বাতাস যেন তাকে উড়িয়ে নিয়ে 8 e (