পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

丐鱼 शांत्रिंक @jहांदब्लौ তো তার একুল-ওকুল দুকুল যাবে, মাথা গুজবার ঠাই থাকবে না জগতে । মামা কি ঠাই দেবে তাকে ? মামারও তো শুনতে বাকী থাকবে না। এ 'কেলেংকারির কথা । ভাবে আর সুবলের প্ৰেমে বিশ্বাস হারিয়ে সে পিঠের জালায় কাতরায়। চুলোর ধোঁয়ায় তার চােখ জলে আর ভাতের হাঁড়ির বাম্পে জগৎ ঝাপসা হয়ে যায়। আগুনের আঁচে মাঝে মাঝে শরীরটা শিউরে ওঠে, জর আসবার মতো উদ্ভট শিহরণ। জল ছুতে গিয়ে গা ছমছম করে। জর কি একটু এসেছে তাহলে তার ? সকলকে ভাত দিয়ে হেঁসেল তুলে খাওয়ার অনিচ্ছা নিয়ে খিদের জালায় কিছু খায়। রসুইঘর বন্ধ করে কুপি হাতে উঠোন পেরিয়ে ঘরের দাওয়ায় কুপিটা নিভিয়ে রেখে ঘরে ঢোকে। চৌকিতে বসে নটাবর তামাক টানছে। কাল তাকে খেদিয়ে দেবে নটবর। এতকাল সোহাগ করে কাল তাকে দূর করে দেবে। সুবলের সঙ্গেই পালিয়ে গিয়ে বা তার তবে কী লাভ হবে ? বৌকে যদি মানুষ খেদিয়ে দিতে পারে, দুদিন পরে সুবল কেন তাকে ফেলে পালাবে না ? নটবরকে একটু নরম করার চেষ্টার কথা মনে আসে, কিন্তু সুখময়ী উৎসাহ পায় না। রাগ কমিয়ে কতবার সে নটবরের সোহাগ আদায় করেছে, কৌশল তার অজানা নয়, কোনদিন ব্যর্থও হয়নি। আজ সে মনে জোর পায় না । বাখ্যারির মারি খেয়েছে বলে নয়। মার খেলেও মান বঁচিয়ে সোহাগ। যাচা যায়। নিজের উপরেই আজ তার বিশ্বাস নেই। নিজেকে কেমন রূপহীনা, কুৎসিত মনে হচ্ছে! তারা যেন কাটির মতো সরু আর কাঠের মতো শক্ত দেহ। কী দিয়ে সে নটবরকে নরম করবে? তার চেয়ে শুয়ে পড়া ভালো। মাথা ঘুরছে, পিঠ জলছে, শরীর ভেঙে পড়ছে, চুপ করে শুয়ে চোখ বুজে রাতটা কাটানো যাক। সুবল নটবর সকলের ভরসাই যখন তার ফুরিয়ে গেছে, কী আর হবে আকাশ পাতাল ভেবে। চৌকিতে উঠতে তার ভরসা হল না। মেঝেতে মাদুর বিছাতে গেল। তখন কথা কইল নটবর। ‘দোর দে, হুকোটা রাখা ।” ফখময়ী দুয়ার বন্ধ করে হুকোটা রেখে মাদুরে শুয়ে পড়ল। পিঠে ব্যথা ছিল, মনে খেয়াল ছিল না, অভ্যাস মতো চিৎ হয়ে শুয়েই মৃদু আর্তনাদ করে সে পাশ ফিরল। চৌকিতে বসে প্রদীপের আলোতে নটাবর তাকে খানিক দেখল, পা গুটিয়ে কি অদ্ভুত ভঙ্গিতে বৌটা তার শুয়েছে। "ל פי 3)