পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शांत्रिक ७jश्दनी স্বয়ং ষে ক্লাইম্যাক্সের আয়োজন করিয়াছেন এই কি তাহার উপযুক্ত সমারোহ ? বিধাতার খেলায় তাড়াহুড়া নাই বলিয়াই কি সকলে চাঞ্চল্য পরিহার করিয়া কোন মতে ধৈৰ্য ধরিয়া আছে ? এই চিন্তার শেষটা নিয়া মনে মনে নাড়াচাড়া করিতে করিতে যাহা ঘটিবার ধীরে সুস্থে তাহ ঘটবেই একথা মানিয়া নেওয়ার মধ্যে যে কতখানি স্বাচ্ছন্দ্য আছে বিকাশ নিজেও সহসা তাহা আবিষ্কার করিয়া ফেলিল । বিকাশের মনে হইল। তাহার দুশ্চিন্তা ও সুলতার যন্ত্রণা যে অশেষ নয়। এই কথাটাই সে বাড়ীতে পা দেওয়া অবধি স্মরণ করিবার চেষ্টা করিতেছিল। রাত বারোটা একটার মধ্যে সব চুকিয়া যাইবে আশা করা যায়। যত কষ্টই পাক সুলতা বারোটা একটা তো একসময় বাজিবেই আজ ! সাতাশ বৎসর ধরিয়া তাহার জীবনে সংখ্যাহীন রাত্ৰি পোহাইয়াছে আজিকার রাত্ৰিও পোহাইবে বৈকি ! আগামী কল্যের যে সুৰ্যালোকে সে সন্তানের মুখ দেখিবে, সে সূৰ্যকে মাটির পৃথিবী কয়েক ঘণ্টার জন্য আড়াল করিয়া রাখিয়াছে মাত্ৰ। জোরে জোরে হুকায় কয়েকটা টান দিয়া বিকাশ জামাটা তুলিয়া নিয়া দোতলায় গেল। নিজের ঘরে পা দিয়াই তাঁহার চমক লাগিল। এখানেও কে যেন অস্ফুটস্বরে কঁদিতেছে। ঘরের মেঝেতে আলোটা কমানে ছিল, বাড়াইয়া দিয়া ঠাণ্ডা করিয়া বিকাশ দেখিতে পাইল, একটা বালিশ অ্যাকড়াইয়া বিছানায় উপুড় হইয়া পড়িয়া পাচু থর থর করিয়া কঁাপিতেছে এবং মাঝে অক্ষুদ্ট শব্দ করিয়া কঁদিতেছে। তাহার পিঠে হাত দিয়া বিকাশ বলিল, “তোর আবার কি হল রে পাঁচু ? পাচু তৎক্ষণাৎ মামাকে সবলে জড়াইয়া ধরিল, বিহ্বল দৃষ্টিতে চারিদিকে তাকাইয়া বলিল ‘ভয় করছে মামা।” ‘কেন ভয় করছে কেন ? যা ভয়ের কিছু নেই।” পাচু হাঁপাইতে হাঁপাইতে বলে ‘একটা শাকচুমী ছাদে বেড়িয়ে বেড়িয়ে চুল বঁধেছিল একটা ভূত এসে তাকে জড়িয়ে ধরল।” ছেলেটা ঘামে ভিজিয়া গিয়াছিল, ভয় সে সত্যই পাইয়াছে, কিন্তু কারণটা বিকাশ বুঝিয়া উঠিতে পারিল না। খোলা জানাল দিয়া ছাদের খানিকটা দেখা যায়, অল্প অল্প জ্যোৎস্নায় মন্দ আলো হয় নাই। ওই ছাদের কিসের উপলক্ষে আজ শাকচুমীর আবির্ভাব হইল, তাহার চুল বাধা দেখিতে ভূতই বা আসিল 6RQV9