পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী রাধা শঙ্কিত হইয়া বলিল, তা কি ও খাবে। বাড়ীতে তামাক টানিতে ওকে আমি নিষেধ করে” দিয়েছি। দৈত্য যে তামাক খাইতেছে না প্ৰমাণ পাইতে দেরী হইল না । উভয়ের চোখের সামনে উঠান পার হইয়া সে বাহিরের দিকে চলিয়া গেল। রাধা ত্বরিদ্বেগে। উঠিয়া দাড়াইল। ছুটিয়া যাইতে উদ্যত হইয়া সে থমকিয়া দাড়াইয়া পড়িল । হেরম্ব বলিল, যান কেড়ে নিন গিয়ে। আজ সারাদিন যদি কেশে থাকেন। এ তামাকের ধোয়া ফুসফুসে গেলে বাঁচবেন না। রাধা বিবর্ণমুখে বলিল, ক’মাস আগে মরবার ভয়ে ও দিশেহারা হয়ে যেত, এখন এমনভাবে তামাক খেতে আরম্ভ করেছে কেন হেরম্ব বাবু? এতো নেশা নয়! না, নেশা নয়। বোধ হয় রোগযন্ত্রণায়রোগযন্ত্রণা ? কি জানি কিসের যন্ত্রণা। আমার গা কঁপিছে হেরম্ব বাবু। রাধার মুখ অস্বাভাবিক সাদা হইয়া গিয়াছিল, হঠাৎ সে যেন ভয়ঙ্কর ভয় পাইয়াছে। হতাশ কণ্ঠে বলিল, ও টের পেয়েছে। নিজে মরে” আমায়। তাই মেরে CSC2, CRCVo b3 রাধা অসহায়ের মত দাড়াইয়া রহিল, নড়িবার শক্তি যেন তাহার লোপ পাইয়াছে। প্ৰথম দিনের কথা হেরম্বের মনে পড়িল, এমনি বিহবলভাবে অন্ধকে । বঁাচাইয়া রাখিতে রাধা তাহার সাহায্য প্রার্থনা করিয়াছিল। অধরের ঘরের দিকে অগ্রসর হইয়া সে বলিল, আসুন, পরে শুনব । ঘরে ঢুকিয়া দেখা গেল তামাকে টান দিবার সুযোগ তখনে অধর পায় নাই, হুক হাতে উঠিয়া বসিবার পরিশ্রমে হঁপাইতেছিল। হুক কাড়িয়া নিতে চোখের রক্তবর্ণ গহবর দুটি উন্মুক্ত করিয়া অধর বলিল, দুটো টান দিতে দাও রাধা । অনেক কষ্টে ধরিয়েছি। দাও, দাও বলছি আমায় হুকো কান্ধি ! অমন প্ৰচণ্ড শব্দ করিয়া কাশিলেও অধর কথা কয় ফিসফিস করিয়া। হেরম্বের মনে হইল কথাকে বঞ্চিত করিয়া সে যেন কাশির জন্য শব্দ সঞ্চয় করে। রাধা বলিল, তুমি মরতে চাও কেন ? চোখের গহবর আরও বেশী উন্মুক্ত করিয়া অধর বলিল, আমি বঁাচতে চাইব কেন ? এ প্রশ্নের জবাব নাই, বিছানার পাশে বসিয়া রাধা চুপ করিয়া রহিল। কয়েক VN 0