পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
মানুষের ধর্ম্ম

যাঁর মধ্যে জ্ঞানশক্তি ও কর্ম্ম স্বাভাবিক, যে-স্বাভাবিক জ্ঞানশক্তিকর্ম্ম অন্তহীন দেশে কালে প্রকাশমান।

 পূর্ব্বেই বলেচি মানুষের অভিব্যক্তির গতি অন্তরের দিকে। এই দিকে তার সীমার আবরণ খুলে যাবার পথ। একদা মানুষ ছিল বর্ব্বর, সে ছিল পশুর মতো, তখন ভৌতিক জীবনের সীমায় তার মন তার কর্ম্ম ছিল বদ্ধ। জ্বলে উঠল যখন ধীশক্তি, তখন চৈতন্যের রশ্মি চলল সঙ্কীর্ণ জীবনের সীমা ছাড়িয়ে, বিশ্বভৌমিকতার দিকে। ভারতীয় মধ্যযুগের কবিস্মৃতিভাণ্ডার সুহৃদ ক্ষিতিমোহনের কাছ থেকে কবি রজ্জবের একটি বাণী পেয়েচি। তিনি বলেচেন,—

সব সাঁচ মিলৈ সে সাঁচ হৈ
না মিলৈ সো ঝূঁঠ।
জন রজ্জব সাঁচী কহী
ভাবই রিঝি ভাবই রূঠ।

সব সত্যের সঙ্গে যা মেলে তাই সত্য, যা মিলল না তা মিথ্যে, রজ্জব বলচে এই কথাই খাঁটি, এতে তুমি খুসিই হও আর রাগই করো।

 ভাষা থেকে বোঝা যাচ্চে রজ্জব বুঝেচেন এ কথায় রাগ করবার লোকই সমাজে বিস্তর। তাদের মত ও প্রথার সঙ্গে বিশ্বসত্যের মিল হচ্চে না, তবু তারা