সীতা। বৎস লক্ষণ! আর্য্যপুত্র বনবাসী হ’লেন, শ্বশ্রূ কৈকেয়ী এখন সপুত্র নিরাপদে রাজসুখ সম্ভোগ করুন্!! এত দিনের পর তিনি পূর্ণ মনোরথ হ’লেন।—হা হত বিধে! তোমার মনে কি এই ছিল? যে আর্যপুত্র নব রাজ্যে অভিষিক্ত হ’য়ে কোথায় আজ প্রকৃতিপুঞ্জ পরিপালন ক’র্ব্বেন্, পুববাসিদের অশেষ সুখ সংবর্দ্ধন ক’র্ব্বেন্, পূজ্যপাদ জনক জননীর আনন্দ বর্দ্ধন ক’র্ব্বেন্, রাজ্যের সমৃদ্ধি সম্পাদন ক’র্ব্বেন্, যাগ যজ্ঞের অনুষ্ঠান ক’রে দেব দ্বিজের তৃপ্তি সাধন ক’র্ব্বেন্, বাহুবলে রিপু, গর্ব্ব খর্ব্ব ক’রে লব্ধপ্রতিষ্ঠ হ’বেন্, সেই অমিত-তেজা আর্য্যপুত্র, এখন কি না সামান্য তাপস বেশে অটাবী-অটন-ব্রতচারী হ’য়েছেন! কি পরিতাপ! —হা বিধাতঃ! তোমার বিচার কি অন্যায়! তুমি যখন পদ্মনালে কণ্টক, কুসুমে কীট, চন্দন তরুতে কাল সাপের আশ্রয় ও পূর্ণশশীকে রাহুর আহার ক’রেছ, তখন আর্য্যপুত্রের বনবাস বিধানে তোমাকে আর অধিক কি ব’ল্বো?
রাম। প্রিযে! বিলাপ সংবরণ কর। তোমার মুখে আক্ষেপেক্তি শুন্লে, হৃদয় বিদীর্ণ হয়।