পাতা:মাসিক মোহাম্মদী (প্রথম বর্ষ).pdf/৩৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Soy এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা-তিন মহাদেশেই তৎকালে অজ্ঞানতা ও কুসংস্কার, পূর্ণ প্ৰতাপে রাজত্ব চালাইতেছিল। একমাত্র সিরিয়া ও মেসোপটেমিয়াতেই প্ৰাচীন গ্রীসের সেই গৌরবোজ্জল জ্ঞান-প্ৰদীপ তখনও ধিকিপিকি করিয় জলিতেছিল। সিরিয়ান, নেষ্টেরিয়ান ও পারসিকগণই গ্ৰীক দৰ্শন-বিজ্ঞানের একমাত্র তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। বহু গ্রীক গ্রন্থাবলী সিরিয়া ভায়ায় অনুদিত হইয়াছিল এবং তােহাদের ভিতর দিয়াই গ্রীসের জ্ঞানালোক এশিয়াখণ্ডে ছড়াইয়া পড়িয়াছিল। জ্ঞান-বিজয়ে বহির্গত হইয়াই গ্ৰীক জাতির এই প্ৰাচীন Sja-Flfssell < Hellenic Culturc-ga 'ss'S 2|{<s:(5; প্ৰথম সাক্ষাৎ ঘটিল। সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া ও পারস্য বিজয়ের পর উম্মাইদ খলিফাগণের সময়ে রাজধানী যখন মদিন হইতে দামেস্ক নগরে স্থানান্তরিত হইল, তখন এইখানে সিরিয়ান, পারসিক ইত্যাদি জাতির সঙ্গে তাহদের পরস্পর পরিচয় হইতে লাগিল। এই সংস্পর্শের ফলেই মুসলমানগণ গ্ৰীক দৰ্শন-বিজ্ঞান আলোচনায় প্ৰবৃত্ত হইলেন। কিন্তু উন্মাইদ খলিফাগণ প্রতিনিয়ত যুদ্ধ-বিগ্রহে ব্যাপৃত থাকায়, তাহারা জ্ঞানানুশীলনের প্রতি বড় একটা মনোযোগ দিতে পারিলেন না। কাজেই মুসলমানদিগের নব-জাগ্রত জ্ঞান-পিপাসা তথায় তৃপ্ত হইল না, বরং এই অতৃপ্তির দরুণ তাহাদের পিপাসা ও ব্যাকুলতা আরও বাড়িয়া গেল, অতঃপর আব্বাসীয় খলিফাগণের সময়ে যখন বাগদাদে রাজধানী স্থাপিত হইল, তখন হইতেই মুসলমানদিগের প্রকৃত জ্ঞান-সাধনা আরম্ভ হইল। মহামতি খলিফা মনসুরের আদেশক্রমে এরিষ্টটল, টলেমী, ইউক্লিড প্রভৃতি গ্ৰীক পণ্ডিত দিগের দর্শন, বিজ্ঞান ও সাহিত্য সম্বন্ধীয় গ্রন্থাবলী আরবী ভাষায় প্ৰথম অনুবাদ করা হইল। শুধু গ্ৰীক নহে, ভারতীয় এবং পারসিক জ্ঞান-ভাণ্ডার ও লুণ্ঠন করিয়া আনা হইল। তাহাদের মধ্যে যেখানে যতটুকু গ্ৰহণযোগ্য ছিল, সমস্তই গ্ৰহণ করা হইল। যষ্ঠ খলিফা পুণ্যস্মৃতি আল-মামুনের রাজত্বকালে মুসলমানদিগের এই জ্ঞান-সাধনা চরমে উঠিল। বিশ্বের তৎকালীন সমস্ত জ্ঞান-ভাণ্ডার মুসলমানদিগের করতলগত হইল। দর্শন, বিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, জ্যোতিষ, স্কলাসিনাকচ মোহাম্মদী [ ১ম বর্ষা, ৪র্থ সংখ্যা খগোল, গণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি, ত্রিকোণমিতি, চিকিৎসাশাস্ত্র, ভূগোল, ইতিহাস, কাব্য, সঙ্গীত, শিল্প-কলা প্ৰভৃতি নানা বিষয়ক জ্ঞানানুশীলনে তঁাহারা প্ৰবৃত্ত হইলেন। এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা-সর্বত্রই যখন গভীর অজ্ঞানান্ধকারে সমাচ্ছন্ন, সেই সময়ে একমাত্র মুসলমানগণই এইরূপে জ্ঞান-শিখা জালাইয়া অন্ধকারের বিরুদ্ধে অভিযান আরম্ভ করিল। ". শুধু বাগদাদেই মুসলমানদিগের এই জ্ঞান-চৰ্চা সীমাবদ্ধ ছিল, তাহা নহে। কায়রো, মরক্কো, কিডোভা, গ্রানাডা, সিভিলি, টলেডো প্ৰভৃতি স্থানেও মুসলমানদিগের বিরাট জ্ঞানমন্দির প্রতিষ্ঠিত হইল। এইরূপে এশিয়া হইতে আফ্রিকা এবং তথা হইতে ইউরোপে সে আলোক ছাড়াইয়া পড়িল । ইউরোপের খৃষ্টানগণ নানা দেশ হইতে আসিয়া স্পেনীয় মূৰ্বদিগের পদমূলে বসিয়া জ্ঞান শিক্ষা করিতে লাগিল এবং স্বদেশে ফিরিয়া গিয়া স্বজাতীয়দিগের মধ্যে উহা প্রচার করিতে । আরম্ভ করিল। ইউরোপীয় সভ্যতার এইখানেই সুচনা। এখানে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে যে, বিশ্ব-সভ্যতায় মুসলমানের মৌলিক দান কতটুকু ? অধিকাংশই ত তাহদের অনুবাদ। ইহা নিতান্তই ভুল ধারণা। শুধু অনুবাদের জন্য নয়, মৌলিক দানের জন্য ও মুসলমান জাতি জগতে বড় হইয়া আছে। প্ৰত্যেক নূতন সৃষ্টির অর্থই হইতেছে সর্বাগ্রে পুরাতনের সন্ধান লওয়া। কি আছে এবং কি নাই ইহা না জানিয়াই যাহারা নূতন সৃষ্টি করিতে প্ৰবৃত্ত হয়, তাহাদের সৃষ্টি সব সময়ে নূতন হয় না। কাজেই মুসলমানগণ সর্বপ্রথমে পুরাতনের সন্ধান লইয়াছিল। তাহা ছাড়া বিশ্ব-মানুষের উন্নতি ও সভ্যতার এরূপ কোন জাতি-বিচার করাও চলে না। হাজার যুগের হাজার ধারার পরস্পর মিলন ও সংঘর্ষে মানুষের সভ্যতা গড়িয়া উঠিয়াছে। দেশ, কাল বা জাতিভেদে কোন সভ্যতাই একক ভাবে পূর্ণতা লাভ করিতে পারে নাই। কাজেই মুসলমানগণ কাহার নিকট হইতে কি ধার লইয়াছেন, সে বিচার করিতে গিয়া তাহার বিরাট দানকে অস্বীকার বা খাটো করিবার প্রবৃত্তি আদৌ প্ৰশংসনীয় নহে। ( ২ ) মুসলমানগণ যদি মৌলিক কিছু দান নাও করিতেন, তবুও মাত্র প্রাচীন জ্ঞান-সভ্যতাকে বাচাইয়া (R) There is a continuity in human progresso. unfair, therefore, is it to oondenn medinval Islamic civilization for having used, amplified enriched the intellectual legacies of the earlier ages. -Tha Arab Civilization. bv. J. Hell.