পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে, কিন্তু তাতে কি ইনি দমেছেন?—না, দমেন নি! ছেলের স্থান পূর্ণ করেছেন এসে তিনি নিজে।

 তারপর সজোরে টেবিল চাপড়ে বললো, ওরা জানে না, অন্ধের মতো কিসের বীজ বুনে চলেছে ওরা! কিন্তু জানবে, সেদিন জানবে, যেদিন আমাদের শক্তি হ’বে পরিপূর্ণ···সেদিন এই বীজ পরিণত হ’বে বিষের ফসলে—আর আমরা কাট্‌ব সেই অভিশপ্ত ফসল।···

 রাইবিনের রক্ত-চক্ষু থেকে যেন আগুন ঠিকরে বেরুচ্ছে, দুর্দমনীয় ক্রোধে মুখ হয়ে উঠেছে লাল। একটু থেমে আবার সে বলতে লাগলো, সেদিন এক সরকারী কর্মচারী আমাকে ডেকে ব’লে, এই পাজি, পুরুতকে তুই কি বলেছিস্? জবাব দিলুম, আমি পাজী হলুম কি ক’রে? কারো কোনো ক্ষতিও করিনে, আর খাইও মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, খেটে। বলতেই হুংকার দিয়ে উঠে লাগালো মুখে এক ঘুষি!···তিন-দিন তিনরাত রাখলো হাজতে পু’রে!···

 অদৃশ্য সরকারী কর্মচারীর উদ্দেশে তর্জন ক’রে রাইবিন বললো, এম্‌নি ক’রে তোমরা লোকের সঙ্গে কথা কও— না? শয়তানের দল, মনে ভেবেছো ক্ষমা করব? না, ক্ষমা নেই। অন্যায়ের প্রতিশোধ নোবই নোব। আমি না পারি, আর কেউ নেবে। তোমাদের না পাই, তোমাদের ছেলেদের ধরব। মনে রেখো এ কথা। লোভের লৌহ-নখর দিয়ে মানুষকে তোমরা রক্তাক্ত করেছো, তোমরা হিংসার বীজ বপন করেছো, তোমাদের ক্ষমা নেই।

 রাগ যেন রাইবিনের মনে গর্জাতে লাগলো। শেষটা সুর একটু নরম ক’রে সে বললো, আর, পুরুতকে আমি কি বা বলেছিলুম? গ্রাম্য পঞ্চায়েতের পর চাষীদের নিয়ে পথে বসে তিনি বোঝাচ্ছেন, মানুষ হচ্ছে

১৪০