পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 চলো— খাবার সময় হয়নি এখনো।

 দু’জনে ইয়েগরের ঘরে গিয়ে দাঁড়াতেই ইয়েগর বললো, লিউদ্‌মিলা ভ্যাসিলিয়েমা, ইনি কর্তাদের হুকুম না নিয়ে জেল থেকে চলে এসেছেন— পয়লা একে কিছু খেতে দাও, তারপর, একে দিন-দু’তিন লুকিয়ে রাখো।

 লিউদ্‌মিলা মাথা নেড়ে রোগীর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে বললো, তা’ রাখছি কিন্তু মুখটা থামাও দেখি, ইয়েগর। জানো, এ তোমার পক্ষে ক্ষতিকর! ওরা আসামাত্র আমায় খবর দেওয়া উচিত ছিল। আর দেখছি ওষুধও খাওনি—এসব গাফেলি করার মানে কি? ওষুধ এক ডোজ খেলে একটু আরাম বোধ কর, এতো তুমি নিজেই বলো···তোমরা আমার ঘরে এসো···এ হাসপাতালে যাবে।

 ইয়েগর বললো, হাসপাতালে না পাঠিয়ে ছাড়বে না তাহ’লে?

 আমিও যাবো তোমার সঙ্গে।

 অর্থাৎ হাসপাতালে গিয়েও তোমার হাত থেকে নিস্তার নেই!

 বোকোনা বলছি।

 তারপর ইয়েগরের বুকে কম্বলটা টেনে দিয়ে শিশিতে ওষুধ কতটা আছে দেখে মার দিকে ফিরে বললো, আমি চললুম একে নিয়ে। তুমি ইয়েগরকে এক দাগ ওষুধ দিয়ো।···কথা বলতে দিয়ো না।

 তারা চলে যেতেই ইয়েগর বললো, চমৎকার মহিলাটি। ওর সঙ্গে যদি কাজ করতে, মা! ওই আমাদের কাগজপত্র সব ছাপিয়ে দেয়।

 চুপ, ওষুধ খাও।—

 ইয়েগর ঢক ঢক ক’রে ওষুধ গিলে বললো, মরব ঠিকই, মা, কথা না বললেও। আর তার জন্য কুচপরোয়া নেই···বাঁচার আনন্দের সঙ্গে মরার বাধ্য-বাধকতা থাকবেই।

১৫২