পাতা:মিত্র-রহস্য - রায় বিহারী মিত্র.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ROS. C-5) 1 ` ̄ ܐ ܩ ভাল রকম খাইতে পায় না। ভাবতবর্ষে মধ্যবিত্তের আয় গড়ে মাসে ত্ৰিশ টাকার অধিক নহে, আর গরীব লোকের আয় মাসে দশ টাকা মাত্র। এরূপ অবস্থায় দশটাকে খাওয়ানো পরানো যে কত কষ্টকর তাহা বৰ্ণনা অপেক্ষা অনুভব দ্বারা অধিক জানা যাইতে পারে। ভারতবর্ষে এক প্রকার বিবাহের প্রচলন থাকিলে এতদুর অভাব হইত না । মাদক দ্রব্য সেবনে ও মামলা-মোকৰ্দমায় আইনবাজ লোককেও কিছু কিছু বখর দিতে হয় ; মোট কথা এইরূপ বাখরা দিতে দিতে নিজ দোষে ভারতবাসীর অবস্থা। ফকরে পোষা দাঁড়ায় । একবার দেবতা অনুগ্ৰহ না করিলে দুর্ভিক্ষ ও মড়কে আক্ৰান্ত হইতে হয়, যেহেতু ঘরে সঞ্চয় কিছুই থাকে না । জ্ঞানী,-কেন ভারতবাসী সঞ্চায়ের জন্য চেষ্টা করে না ? বোকা,- একজনের কাজ নয়, সকলে চেষ্টা করিলে অবশ্য হইতে পারে । জ্ঞানী,- কেন সকলে চেষ্টা করে না ? বোকা,-ভারতবাসীর স্বভাব এক নহে। যতটি লোক সংখ্যা আছে ততটি মত ভেদ ; মতের সংখ্যা এত বেশী হইয়া পড়িয়াছে যে কেহ কাহারও মতে চলে না, তবে খালি “এক ব্যতীত দ্বিতীয় নাই” টির ঠিক আছে, কারণ এটিতে খিচুড়ি পাকান হইলে কোন গোলমাল হয় না। ভারতবাসী দূরদর্শী নহে, বরং নিকটদৰ্শী। নিজের নাম, ধাম, ধন ও মর্যাদা যে রকমেই হউক সংগ্ৰহ করিতে পারিলেই যথেষ্ট ; কারণ ভারতবাসার ভিতর চরিত্ৰ-নীতির অভাব, বাস্তবিক চরিত্ৰ-নীতি ধৰ্ম্মের অভাব ঘটলে সঞ্চয় জোটে না । যে দিন হইতে ভারতবর্ষে চরিত্র নীতি ধৰ্ম্মের প্রচার হইবে, সেই দিন হইতে ভারতবাসী দূরদর্শী হইতে সুরু হইবে,-“আর একজনের সর্বনাশ ও অপরের পৌষ মাস।” হুইবে না ।