পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
মিবার- গৌরব-কথা

হইবে!—তবেই আমার ক্ষুধা যাইবে, নচেৎ নহে! এই বলিয়া দেবী অন্তর্ধান হইলেন। রাণা শুনিয়া উন্মাদ প্রায় হইলেন। রাণা লক্ষ্মণ সিংহের দ্বাদশটী পুত্র ছিল। ভাবিলেন, সকলেই যদি রণক্ষেত্রে প্রাণ দেয়, বাপ্পা রাওয়ের বংশে বাতী দিতে কে আর থাকিবে? কিন্তু রাজকুমারেরা দেবীর কথা শুনিয়া উৎসাহে বলিয়া উঠিলেন, “পিতঃ! শোক করিবেন না, তুচ্ছ প্রাণ দানে যদি দেশের স্বাধীনতা রক্ষা হয়, সৌভাগ্য আমাদের। দেবীর যদি ইহাই বাসনা হয়, অচিরে ইহা পূর্ণ হইবে।” জ্যেষ্ঠ পুত্র অরিসিংহের রাজ্যাভিষেক হইল। তিন দিন রাজ্যভোগের পর চতুর্থ দিবসে তিনি পিতার চরণধুলি লইয়া প্রসন্ন মনে যুদ্ধক্ষেত্রে গমন করিলেন, আর ফিরিলেন না। দ্বিতীয় পুত্র অজয় সিংহ পিতার পরম আদরের ধন। রাণা কিছুতেই তাঁহাকে প্রাণ বিসর্জ্জন দিতে দিলেন না। আর দশজন রাজকুমার রাজমুকুট ধারণ করিয়া একে একে রণক্ষেত্রে প্রাণ বিসর্জ্জন দিলেন। রাজপুত রমণীগণ জলন্ত চিতায় শয়ন করিলেন। চিতোর ধ্বংস হইল। অজয় সিংহ দীনভাবে কৈলবারায় বাস করিয়া চিতোর স্বাধীন করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন বটে কিন্তু সক্ষম হন নাই।