পাতা:মুর্শিদাবাদের ইতিহাস-প্রথম খণ্ড.djvu/৬৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম অধ্যায় । ૯૭૧ তিনি সকলেরই সন্মানের পাত্র ছিলেন। র্তাহার প্রজাবর্গেব মধ্যে কেহই তাহার উপর অসন্তুষ্ট ছিলনা। কি হিন্দু, কি মুসলমান, কি জমীদার, কি প্রজা, কি কৰ্ম্মচারী, কি সাধারণ, সকলেই একবাক্যে তাহার মঙ্গল কামনা করিত। তাহার সাধু ব্যবহারে মোহিত হইয় সকলেই তাহার আদেশপ্রতিপালনে প্রাণপণে যত্নবান হইত। সুজা উদ্দীন এই সমস্ত গুণে অলঙ্কত হইয়া কেবল একটা মাত্র দোষের জন্ত জনসমাজে নিন্দাভাজন হইয়া গিয়াছেন। মুসলমান শাসনকর্তৃগণ যে কলঙ্কের জন্ত সভ্যজগতে ঘৃণিত, সুজা উদ্দীন সেই বিলাসিতার হস্ত হইতে নিষ্কৃতি লাভ করিতে পারেন নাই। ইহা অতীব দুঃখের বিষয় যে, জগতে পূর্ণ সাধুচরিত্র প্রায়ই দেখিতে পাওয়া যায় না। সুজা উদ্দীনের দ্যায় মহৎ চরিত্রেও ইন্দ্রিয়পরায়ণতা স্পর্শ করিয়াছিল। এই বিষয়ে মুর্শিদকুলী খাঁ তাহার অপেক্ষা সহস্র গুণে শ্রেষ্ঠ ছিলেন। বিলাসিত কিম্বা ইন্দ্রিয়পরায়ণতা মুর্শিদকুলী খাকে স্পর্শ করিতে পারিত না। কিন্তু নুজা উদ্দীন তাহাতেই মগ্ন হইয়া থাকিতেন। তাহার এই দোষের জন্ত স্বীয় প্রণয়িনী জিন্নেতেন্নেসা অনেক দিন তাহার নিকট হইতে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। মুর্শিদাবাদের সুবেদারী গ্রহণ করিয়া জিন্নেতান্নেসার সহিত র্তাহার মিলন হইলেও তিনি বিলাসিতার হস্ত হইতে অব্যাহতি পান নাই। কিছু দিন রাজ্যশাসনের পর তিনি অত্যন্ত বিলাসপরায়ণ হইয় উঠেন, ও মন্ত্রিসভার উপর সমস্ত রাজকাৰ্য্যের ভার অর্পণ করিয়া, ভাগীরথীতীরস্থ ফর্হাবাগে সময় যাপন করিতেন। তথায় বসন্ত ও গ্রায় কালে নানাবিধ মুগন্ধি দ্রব্য গাত্রে লেপন করিয়া কৃত্রিমনিঝ রশিকরশ্নাত মলয়সমীরণে স্নিগ্ধ হইয়া কোকিলকণ্ঠবিনিন্দিত রমণীস্বরে আনন্দ অনুভব করিতে করিতে শেষ জীবন অতিবাহিত করিয়াছিলেন। যদি তাহার চরিত্রে এই