পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রঙ্গভূমি।

লীকে সম্বোধন পূর্ব্বক কহিলেন যে “এ তীর কে ত্যাগ করিয়াছিল?”

 কেহ উত্তর দিল না। কুতুবউদ্দীন পুনরপি জিজ্ঞাসা করিলেন “এ তীর কে ত্যাগ করিয়াছিল?”

 যে যবন জনেক হিন্দুশস্ত্রধারীকে তাড়না করিয়াছিল, সে এইবার কহিল, “জাঁহাপনা! এক জন কাফের এই স্থানেই দাঁড়াইয়া তীর মারিয়াছিল দেখিয়াছি, কিন্তু তাহাকে আর দেখিতেছি না।”

 কুতব-উদ্দীন ভ্রূকুটী করিয়া কিয়ৎক্ষণ বিমনা হইয়া রহিলেন। পরে কহিলেন, “বখ্‌তিয়ার খিলিজি মত্তহস্তী যুদ্ধে বধ করিয়াছেন, তোমরা তাঁহার প্রশংসা কর। কোন কাফের তাঁহার গৌরবের লাঘব জন্মাইবার অভিলাষে, অথবা তাঁহার প্রাণসংহার জন্য এই তীর ক্ষেপ করিয়া থাকিবে। আমি তাহার সন্ধান করিয়া সমুচিত দণ্ডবিধান করিব। তোমরা সকলে গৃহে গিয়া আজিকার দিন আনন্দে যাপন করিও।”

 ইহা শুনিয়া দর্শকগণ ধন্যবাদ পূর্ব্বক স্ব স্ব স্থানে গমন করিতে উদ্‌যুক্ত হইল। ইত্যবসরে কুতবউদ্দীন একজন পারিষদকে হস্তস্থিত তীর প্রদান করিয়া তাহার কর্ণে কর্ণে উপদেশ দিলেন; “যাহার নিকট এইরূপ তীর দেখিবে তাহাকে আমার নিকট লইয়া আসিবে। অনেকে সন্ধান কর।”