পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিঞ্জরের বিহঙ্গিনী।
২৭

তাঁহার সে ভাব দূর করা কি উচিত নহে?’ আমি কহিলাম? ‘যাহা উচিত তাহা তাঁহার নিজমুখে আমি শুনিতে পাইয়া থাকি। আমার সহিত সাক্ষাৎ যদি তাঁহার সঙ্গে অনুচিত হয়, তবে তিনি কদাচ আমার সহিত আর সাক্ষাৎ করিবেন না। তজ্জন্য আমার প্রতি মহাশয়ের পীড়ন অনাবশ্যক।’ মাধবাচার্য্য বলিলেন, ‘বালকে ভাবিয়া থাকে, বালক ও বৃদ্ধ উভয়ের বিবেচনাশক্তি তুল্য; কিন্তু তাহা নহে। এ বয়সে বঞ্চবিংশতিবর্ষীয় বালকের অপেক্ষা আমাদিগের পরিণামদর্শিতা যে অধিক তাহাতে সন্দেহ করিও না। আর তুমি সম্মতা হও বা না হও, যাহা সঙ্কল্প করিয়াছি তাহা সিদ্ধ করিব। আমি তোমাকে দেশাস্তরে লইয়া যাইব। গৌড় দেশে অতি শান্তস্বভাব এক ব্রাহ্মণের বাটীতে তোমাকে রাখিয়া আসিব। তিনি তোমাকে আপন কন্যার ন্যায় যত্ন করিবেন। এক বৎসর পরে আমি তোমার পিতার নিকট তোমাকে আনিয়া দিব। আর সে সময়ে হেমচন্দ্রে যে অবস্থায় থাকুন, তোমার সহিত তাঁহার বিবাহ দেওয়াইব, ইহা সত্য করিলাম। এই প্রলোভন-বাক্যেই হউক, আর অগত্যাই হউক, আমি নিস্তব্ধ হইলাম। তাহার পর এই খানে আসিয়াছি।”


গ২