পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
মৃণালিনী।

 মেঘমুক্ত সূর্য্য়ের ন্যায় হেমচন্দ্রের মুখ প্রফুল্ল হইল। তিনি কহিলেন,

 তোমার সর্ব্বকামনা সিদ্ধ হউক—মৃণালিনী কি বলিল?”

 গি। “তা ত বলিয়াছি।”

 “ডুবিয়া অতল জলে মৃণালিনী মরে।”

 হে। “মৃণালিনী কেমন আছে?”

 গি। “দেখিলাম শরীরে কোন পীড়া নাই।”

 হে। “সুখে আছে কি ক্লেশে আছে কি বুঝিলে?”

 গি। “শরীরে গহনা, পরিধানে ভাল কাঁড়-হৃষীকেশ ব্রাহ্মণের কন্যার সই।”

 হে। “তুমি অধঃপাতে যাও; মনের কথা কিছু বুঝিলে?”

 গি। “বর্ষাকালের পদ্মের মত। মুখখানি কেবল জলে ভাসিতেছে।”

 হে। “পরগৃহে কি ভাবে আছে?”

 গি। “এই অশোক ফুলের স্তবকের মত। আপন গৌরবে আপনি নম্র।”

 হে। “গিরিজায়ে! তুমি বয়সে বালিকা মাত্র। তোমার ন্যায় বালিকা আর দেখি নাই।”

 গি। “মুষ্ট্যাঘাতের উপযুক্ত পাত্রও এমন আর দেখেন নাই।”

 হে। “সে আপরাধ লইও না। মৃণালিনী আর কি বলিল?”

 গি। “যো দিন জানকী—”

 হে। “আবার?”

 গি। “যো দিন জানকী—রঘুবীর নিরখি—”