পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
মৃণালিনী।

 হেমচন্দ্র কহিলেন, “আপনি এখানে কোথা হইতে আসিলেন?”

 মাধবাচার্য্য এ কথায় কোন উত্তর না দিয়া কহিতে লাগিলেন,

 তুমি এ পর্য্যন্ত নবদ্বীপে না গিয়া পথে বিলম্ব করিতেছ—ইহাতে তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়াছি। আর তুমি বে মৃণালিনীর সন্ধান পাইয়াও আত্মসত্য প্রতিপালনার্থ তাহার সাক্ষাতের সুযোগ উপেক্ষা করিলে, এজন্য তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হইয়াছি। তোমাকে কোন তিরস্কার করিব না। কিন্ত এখানে তোমার আর বিলম্ব করা হইবে না। মৃণালিনীর প্রত্যুত্তরের প্রতীক্ষা করা হইবে না। বেগবান্‌ হৃদয়কে বিশ্বাস নাই। আমি অদ্যই নবদীপে যাত্রা করিব। তোমাকে আমার সঙ্গে যাইতে হইবে নৌকা প্রস্তত আছে। অস্ত্র শস্ত্রাদি গৃহমধ্য হইতে লইয়া আইস। আমার সঙ্গে চল।”

 হেমচন্দ্র নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিলেন। হানি নাই—আমি আশা ভরসা বিসর্জ্জন করিরাছি। চলুন। কিন্ত আপনি—কামচর না অন্তর্যামী?”

 এই বলিয়া হেমচন্দ্র গৃহমধ্যে পুনঃপ্রবেশ পূর্ব্বক বনিকের নিকট বিদায় গ্রহণ করিলেন। এবং আপনার সম্পত্তি এক জন বাহকের স্বন্ধে দিয়া আচার্য্যের অনুবর্ত্তী হইলেন।