বিজ্লী মুখ তুলিয়া একটুখানি হাসিয়া বলিল, আর পারব না, বলে।
অর্থাৎ?
অর্থাৎ আর না। বাইজী মরেছে—
মাতাল সন্দেশ চিবাইতেছিল। কহিল, কি রোগে বাইজী?
বাইজী আবার হাসিল। এ সেই হাসি। হাসিমুখে কহিল, যে রোগে আলো জ্বালালে আঁধার মরে, সূর্য্যি উঠলে রাত্রি মরে-আজ, সেই রোগেই তোমাদের বাইজী চিরদিনের জন্যে মরে গেল বন্ধু।
॥ছয়॥
চার বৎসর পরের কথা বলিতেছি। কলিকাতার একটা বড় বাড়িতে জমিদারের ছেলের অন্নপ্রাশন। খাওয়ানো-দাওয়ানোর বিরাট ব্যাপার শেষ হইয়া গিয়াছে। সন্ধ্যার পর বহির্বাটীর প্রশস্ত প্রাঙ্গণে আসর করিয়া আমোদ-আহ্লাদ, নাচ-গানের উদ্যোগ-আয়োজন চলিতেছে।
একধারে তিন-চারটি নর্তকী-ইহারাই নাচ-গান করিবে। দ্বিতলে বারান্দায় চিকের আড়ালে বসিয়া রাধারাণী একাকী নীচের জনশাগ দেখিতেছিল। নিমন্ত্রয়িতা মহিলারা এখনও শুভাগমন করেন নাই।
নিঃশব্দে পিছনে আসিয়া সত্যেন্দ্র কহিলেন, এত মন দিয়ে কি দেখচ বল ত?
রাধারাণী স্বামীর দিকে ফিরিয়া চাহিয়া হাসিমুখে বলিল,যা সবাই দেখতে আসচে-বাইজীদের সাজ-সজ্জা-কিন্তু হঠাৎ তুমি যে এখানে?
স্বামী হাসিয়া জবাব দিলেন, একলাটি বসে আছ, তাই একটু গল্প করতে এলুম।
ইস্।
সত্যি। আচ্ছা, দেখচ ত, বল দেখি, ওদের মধ্যে সবচেয়ে কোন্টিকে
৫৯