আমার বিয়া করলে চিত্তে পাইবা বড় সুখ।
নৈলে গাছের পাতা ঝরব দেখ্যা তোমার দুঃখ॥
চিত্তে বুঝি দেখ যদি কর ইতে আন।
মোর বাড়ী ছাড়াইয়া জলদি করহ প্রস্থান॥”
এই কথা শুনিয়া কমলা কয় কারকুনেরে।
“শুনছ নি[১] কেউ করে বিয়া নরপিচাশেরে॥
আমার বাপের লুন খাইয়া বাচিলা পরাণে।
তার গলায় দিতে দড়ি না বাঝিল[২] প্রাণে॥
পরাণের সোদর ভাইয়ে দুঃখ যেই দিল।
মুখে মারি ঝাটা তার পিঠে লাথি কিল॥
বনে জঙ্গলায় থাকবাম নাহি ইতে ডর।
তবু নাই সে করবাম এমন রাক্ষসার ঘর॥
মায়ে ঝিয়ে ভিক্ষা মাগ্যা খাইব নগরে।
তিলেক না রইব আর রাক্ষসের ঘরে॥
পায়ের গোলাম তুই পায়ের নফর।
চরণে আছস বান্ধ। হৈয়া চাকর॥
কি আর কহিব তরে[৩] পশুর অধম।
মাথায় তুল্যা কেবা লয় পায়ের খরম॥
বাপ ভাই দেশে থাকত কইতে এমন কথা।
কোটালে ডাকিয়া তোর কাটিতাম মাথা॥
তেকাটিয়া[৪] পথে নিয়া দিতাম তোরে শালে।
বিধি শুনাইলা কথা আছিল কপালে॥”
এই কথা বলিয়া কমলা কি কাম করিল।
আন্দি সান্দি দুই ভাইয়ে খবর যে দিল॥
তারা দুই ভাইয়ে করে সোয়ারীর কাম[৫]।
মায়ে ঝিয়ে লইয়া তারা গেল মামার ধাম॥১—৪০
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৯২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪২
মৈমনসিংহ-গীতিকা