(৫)
ভাসান সংগীত
ঠাকুর কহেন তবে শুন কেনারাম।
“এইখানে গাইব আমি জন্মের শেষ গান॥”
দুই চক্ষে অশ্রু বহে মনসা স্মরিয়া।
“জীবনের শেষ গান লইব গাহিয়া॥
তাইতে একটু সময় দেও মোরে ধার।
গান শেষে কর তুমি কার্য্য আপনার॥”
কি জানি ভাবিয়া কেনা কয় ঠাকুরের স্থানে।
“গাও খাণ্ডা পুনঃ নাহি ধরি যতক্ষণে॥”
আকাশ চাঁদোয়া হইল শুনে পশুপাখী।
কেনারাম বসিল যে হাতের খাণ্ডা রাখি॥
উড়িয়া যায় পাখী আসি বসিল ডালেতে।
মনসা ভাসান গায় অঞ্জনার[১] সুতে॥
বিস্তার প্রান্তরে কেনা দূর্ব্বার বিছানে।
গাহান[২] শুনিতে বসল দলবল সনে॥
প্রেমেতে বিভোর পিতা ভাবে আত্মহারা।
কথায় কথায় চক্ষে বহে অশ্রুধারা॥
গাহান শুনিয়া কেনা ভাবে মনে মনে।
সাক্ষাৎ দেবতা বুঝি নামিতা ভুবনে॥
গাহিতে গাহিতে পরে সন্ধ্যা গুজরিল[৩]।
কেনার হুকুমে গান চলিতে লাগিল॥
কেনার ইঙ্গিতে যত ডাকাতিয়া ছিল।
আন্ধার নাশিতে সবে মশাল জ্বালিল॥
মশালের তেজে হইল বন যে উজালা।
সূর্য্যের পশরে[৪] যেমন দিন হইল আলা॥